এসএসসি গ্রুপ সি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে বিশেষ সিবিআই আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীনই তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত কক্ষ। ভরা এজলাসেই অভিযুক্তের আইনজীবী ও সিবিআই আইনজীবীদের মধ্যে বাধে বাগবিতণ্ডা। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ উঠল সিবিআইয়ের সহকারী আইনজীবীর বিরুদ্ধে। পাল্টা প্রতিবাদ করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা।
অভিযুক্তের আইনজীবীরা সিবিআই-এর আইনজীবীর দিকে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। এরপর ঘটনা আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে আদালত কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান সিবিআই-এর আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার গ্রুপ সি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব ছিল। এসএসসি টেকনিক্যাল অফিসার রাজেশ লায়েককে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়েই তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শুনানির মাঝেই সিবিআইয়ের বিশেষ সরকারি আইনজীবী ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবীর মধ্যে বচসা চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। বচসা চলতে থাকে বিচারকের সামনেই।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, যে সময়ে এসএসসি-র নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, সেখানে টেকনিক্যাল অফিসার পদে ছিলেন রাজেশ লায়েক। সোমবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই সাক্ষী জানান, ‘কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া ছিল আমার দায়িত্ব। ২০১৮ সালে প্রায় পাঁচ থেকে ছ’হাজার নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। হার্ড কপির ভিত্তিতে তৈরি হত সফট কপি।’ পাশাপাশি অভিযোগ, লকডাউনের সময়েও চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। আর সেই প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও শান্তিপ্রসাদ সিংহ। সাক্ষীর দাবি, ওই নিয়োগপত্র আরটিআইয়ের নাম করে বিতরণ করা হয়। এদিন যখন সিবিআই-এর আইনজীবীরা জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তখন পাল্টা প্রশ্ন করেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবীরাও। সেখান থেকেই শুরু এই বাগবিতণ্ডার।
এই ঘটনায় মাঝের কিছুক্ষণের জন্য শুনানি বন্ধ থাকে। এই ধরনের ঘটনা আদালতকক্ষে নজিরবিহীন বলেই বলছেন বর্ষীয়ান আইনজীবীদের একাংশ। আদালত সূত্রে খবর, পরে সরকারি আইনজীবীরা আবার ফিরে আসেন। এরপর ফের শুনানি পর্ব শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ইডির মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই জামিন দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে এখনও তাঁর জেলমুক্তি হয়নি। ইডির মামলায় জামিন পেলেও সিবিআই মামলায় তাঁকে আপাতত জেল হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে!











