এসআইআর এর বিরদ্ধে সুর চড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সন্ধেয় দাবি করেন, ‘এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান।’ একইসঙ্গে অভিষেক এদিন নির্বাচন কমিশনকে বিদ্ধ করে এও বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য, কোনও দিন-ই এসআইআর করে ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করা নয়। যদি তাই লক্ষ্য থাকত, এই ভোটার লিস্টের নিরিখেই ২০২৪ সালে আজ থেকে দেড় বছর আগে লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। যেখানে বাংলা-সহ দেশের ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদরা নির্বাচিত হয়েছেন। পরবর্তীকালে দেশের সরকার এসেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান। আমরা তো ভোট থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে এই ভোটার লিস্টে আমিও সাংসদ হয়েছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে, যাঁরা মন্ত্রিসভায় আছেন, তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন এই ভোটার লিস্টের নিরিখে। তাঁদের মৌলিক দায়িত্ব ইস্তফা দিয়ে, তারপর আপনি এসআইআর করুন না। কেউ তো বারণ করছে না।’
এর পাশাপাশি অভিষেকের সংযোজন, ‘আগে মানুষ ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার কে ভোট দেবে তাদের সিলেক্ট করছে। আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার পছন্দের মতো তার ভোটার বেছে নিচ্ছে। কে ভোটার লিস্টে থাকবে, আর কার নাম বাদ যাবে।’ পাশাপাশি অভিষেক কটাক্ষের সুরে এদিন এও বলেন, ‘এসআইআর হচ্ছে সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং অর্থাৎ চুপিচুপি ভোটে কারচুপি।’ তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে ব্যাখ্যা দিয়ে অভিষেক এদিন এও বলেন, ‘আগে যখন এসআইআর হয়েছিল তখন সময় লেগেছিল ২ বছর। এবার বলছে ২ মাসে হয়ে যাবে। কীভাবে? এত সময়ে কেন?’ অভিষেকের দাবি, ত্রুটিমুক্ত করাই উদ্দেশ্য হলে সময় নিয়ে এসআইআর করা হত। আদতে পরিকল্পনামাফিক বহু বাসিন্দার নাম বাদ দিতেই এই চক্রান্ত। আর এখানেই তৃণমূল সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের হুমকি, ‘একজন বৈধ ভোটারের নামও যদি বাদ যায়, দিল্লিতে কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করা হবে।’ এদিকে একসঙ্গে বাংলা-সহ ১২টি এসআইআর ঘোষণা করেছে কমিশন। বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখেই এই পরিকল্পনা। সেখানেই অভিষেকের প্রশ্ন, আগামী বছর অসমেও নির্বাচন। আর এখানেই অভিষেকের প্রশ্ন, তাহলে কেন সেখানে এসআইআর হবে না তা নিয়েই। আর এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল সাংসদের দাবি, কৌশলে বিজেপি শাসিত অসমকে এই তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
এর পাশাপাশি এসআইআর এর ঘোষণা হতেই এনআরসি আতঙ্কে পানিহাটির এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের। এই মৃত্যুর দায় অমিত শাহ ও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বলেই তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শাহ ও জ্ঞানেশ কুমারের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত বলেই দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ।











