সপ্তর্ষি সিংহ
দীপাবলি উপলক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে শহরে চারটি বাজি বাজারের আসর বসতে চলেছে। শহিদ মিনার সংলগ্ন মাঠ, উত্তর কলকাতার টালা ময়দান, দক্ষিণ কলকাতার বেহালা এবং পূর্ব কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া কালিকাপুর মাঠে বাজি বাজারের আসর বসছে। প্রতি বছরের মতো পরিবেশবান্ধব বাজি বিকিকিনির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাজি বাজারে বিক্রি করা যাবে না কোনওরকম শব্দবাজি। থাকবে কেবল গ্রিন বাজির পসরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে বিক্রেতাদের জন্য। গত ৬ অক্টোবর বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠকও করেছে লালবাজার। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ওই বৈঠকে বাজি বাজারের নিরাপত্তা ও নিয়মাবলী চূড়ান্ত করা হয়। গ্রিন বাজিই কেবলমাত্র বিক্রি করার নির্দেশ রয়েছে। তবে কোনটি আসল গ্রিন বাজি তা সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে চেনার উপায় কী? এই বিষয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এবছর গ্রিন বাজিতে কিউআর কোড থাকার বিষয়টি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। অনেক বাজি ব্যবসায়ী মনে করেন, কিউআর কোড কখনওই বাধ্যতামূলক হতে পারে না। এই বিষয়ে বড়বাজার ফায়ারওয়ার্কস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু দত্ত বলেন, আনুমানিক ৫০টি দোকান রাখা হয়েছে। টালা বাজারের উদ্যোক্তা শুভঙ্কর মান্না জানিয়েছেন, টালাতে ৪৪টি দোকান বসবে। সমস্ত বাজারগুলোতে কেবল পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি বিক্রি করা হবে। বেআইনি ভাবে বাজি বিক্রির প্রসঙ্গ তুলে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ফুটপাতে বাজি বিক্রি করা বিপজ্জনক। এর বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন’। বড়বাজার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক ধ্রুব নারুলা বলেন, “এবার আলাদা করে বাজির প্যাকেটে কিউআর কোড থাকা বাধ্যতামূলক নয়। সরকারি অনুমোদিত প্রস্তুতকারকদের তালিকা থাকবে। সেই প্রস্তুতকারকদের তৈরি বাজিই বৈধ। পুরোনো বক্সে কিউআর কোড থাকলে তা থাকবে।” তিনি জানান, পুলিশ অবৈধ বাজি আটকানোর কাজ চলাচ্ছে এবং ‘পপ’ নামের বেআইনি বাজিগুলি শনাক্ত করে ধরা হচ্ছে। পরিবেশ বিজ্ঞানী সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন, “রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বাজি উৎপাদক সংস্থার একটি দুষ্ট চক্র কাজ করছে।

বিপুল টাকার লেনদেনের আশঙ্কা করছি আমরা। কারণ, যে শিল্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পরিবেশ জনজীবন, সেই শিল্পে লাগাম টানার পরিবর্তে আচমকাই খোলা ময়দান দিয়ে দিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। শব্দের উচ্চমাত্রা বৃদ্ধি করে দিচ্ছে৷ যার জেরে অনেক নিষিদ্ধ বাজিও আর ধরপাকড়ের আওতায় থাকবে না। দেদার ফাটানো যাবে। ফলে বেলাগাম সেই শব্দের দাপটে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ কিংবা অসুস্থ মানুষজন, তারা আরও সমস্যার সম্মুখীন হবেন।” ইতিমধ্যে প্রশাসনের শব্দমাত্রা বৃদ্ধির বিরোধিতা করে সবুজ মঞ্চের মতো পরিবেশ সংগঠনগুলি পথে নেমেছে।