একইসঙ্গে ভোটগ্রহণে বেশ কিছু পরিবর্তনের কথাও ঘোষণা করলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনেই প্রথম বার ইভিএম ব্যালট অর্থাৎ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে থাকবে প্রার্থীর রঙিন ছবি। সঙ্গে প্রার্থীর নামও ছাপা থাকবে বড় হরফে বলে জানালেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তিনি জানান, বর্তমানে সাদা-কালো ব্যালট পেপারে দলের প্রতীক চিহ্ন স্পষ্ট বোঝা গেলেও প্রার্থীর চেহারা বুঝতে অনেক সময়ে বেগ পেতে হয় ভোটারকে। ছোট হরফে ক্রম সংখ্যা লেখা থাকায় পড়তে অসুবিধা হয় বয়স্কদের। সেই সব সমস্যার কথা ভেবেই এই নয়া পরিবর্তনের কথা ভেবেছে কমিশন। বিহার ভোটেই ভোটাররা এই নয়া ধরনের ইভিএমে ভোট দেবেন বলে জানালেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘যখন ইভিএমে ব্যালট পেপার ঢোকানো হয়, তখন এর ছবি সাদা-কালো থাকে, যার ফলে নির্বাচনী প্রতীক থাকলেও তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। সিরিয়াল নম্বরটি আরও বড় করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল। তাই, বিহার নির্বাচন থেকে শুরু করে, সারা দেশে সিরিয়াল নম্বরের ফন্টটি আরও বড় হবে এবং প্রার্থীদেরও রঙিন ছবি থাকবে।’
এ ছাড়া পোলিং স্টেশন ম্যানেজমেন্টেও পরিবর্তন আনছে কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন যে, ‘নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোনও ভোটকেন্দ্রে ১,২০০ জনের বেশি ভোটার থাকবে না।’ এ ছাড়াও জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছেন, এ বারও ভোটকেন্দ্রে ১০০ শতাংশ কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, বুথ-স্তরের কর্মকর্তাদের আরও ভালোভাবে শনাক্ত করার জন্য পরিচয়পত্র চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় বুথ-স্তরের কর্মকর্তাদের আরও ভালোভাবে শনাক্ত করার জন্য পরিচয়পত্র চালু করা হয়েছে। বুথের বাইরের একটি ঘরে মোবাইল ফোন জমা রাখা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি গোটা বিহার জুড়ে বাস্তবায়িত হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ওয়েবকাস্টিং হবে।’ এসআইআর প্রক্রিয়ার পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিং সিন্ধু এবং বিবেক যোশীর সঙ্গে বিহার সফরে এসেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তিনি জানিয়েছেন যে পরিবর্তনগুলি প্রথমে বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কার্যকর করা হবে এবং তারপরে দেশব্যাপী প্রয়োগ করা হবে।
২২ নভেম্বরের আগেই নির্বাচন, বিহারে ভোটগ্রহণের আগেই একাধিক নিয়ম পরিবর্তনের ঘোষণা করলেন জ্ঞানেশ কুমার।উল্লেখ্য, ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় বর্তমানে শাসকের আসনে এনডিএ। তাদের শিবিরে বিজেপির পাশাপাশি রয়েছে জেডিইউ ও এলজেপি। মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন নীতীশ কুমার। অন্যদিকে আরজেডি-এর নেতৃত্বে বিরোধী শিবিরে রয়েছে কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি। এর বাইরে প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বে জনসূরজ পার্টিও এবার সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছে। ত্রিমুখি এই লড়াইয়ে বাকিদের টক্কর দিতে ইতিমধ্যেই খয়রাতির রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন নীতীশ। একের পর এক ভাতা ঘোষণা করা হচ্ছে সরকারের তরফে। অন্যদিকে, বিজেপির বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতির পাশাপাশি ভোটচুরির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল।