নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন সুশীলা কার্কি। রবিবার নিজের দফতরের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। তারপরেই জাতির উদ্দেশে প্রথম বার ভাষণ দিয়ে সুশীলা জানান, দেশবাসীর সেবা করতে চান তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, যুবসমাজের আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের ‘শহিদের’ মর্যাদা দেওয়া হবে।
সুশীলা কার্কি জানিয়েছেন, বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। ওই বিক্ষোভে আহতদেরও সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন সুশীলা কার্কি। জেন জ়ি আন্দোলনের জেরে পতন হয়েছে নেপালের কেপি ওলি শর্মার সরকারের। তাঁদের বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন কেপি ওলি শর্মা। তার পরেই নেপালের সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয় জেন জ়ি। শুক্রবার রাতেই শপথ নিয়েছেন সুশীলা কার্কি। রবিবার তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এদিন সকালে সিংহ দরবারে নিজের দফতরের দায়িত্ব নেন তিনি। এই সিংহ দরবারেই ছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। কিন্তু গণবিক্ষোভের সময় ওই ভবনের সিংহভাগ অংশ প্রতিবাদীদের লাগানো আগুনে পুড়ে গিয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরেই আপাতত প্রধানমন্ত্রীর দফতর করা হয়েছে। রবিবার সেই দফতরে বসেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সুশীলা কার্কি। নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। আমি এবং আমার দল এখানে ক্ষমতার স্বাদ নিতে আসিনি। আমরা ছ’মাসের বেশি পদে থাকব না। নতুন পার্লামেন্টকে দায়িত্ব দিয়ে দেব। আপনাদের সমর্থন ছাড়া থাকব না।’’ এর পরে তিনি নেপালের পুনর্গঠনেরও ডাক দেন। সুশীলা জানান, ‘‘নেপালকে আবার গড়ে তোলার জন্য সমস্ত অংশীদারদের এগিয়ে আসা উচিত। আমরা হাল ছাড়ব না। আমাদের দেশকে পুনরুদ্ধার করতে একসঙ্গে কাজ করব।’’ প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার নেপালে সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন কেপি ওলি। সাময়িক ভাবে তার পর নেপালের ক্ষমতা গিয়েছিল সেনার হাতে। দেশের বিক্ষোভরত তরুণ প্রজন্ম প্রাথমিক ভাবে সুশীলা কার্কিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তাঁর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলে তিনি এই প্রস্তাবের পক্ষে অন্তত এক হাজার লিখিত স্বাক্ষর দাবি করেন। স্বাক্ষর উঠেছিল আড়াই হাজারের বেশি। সুশীলা শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে শপথ নেন। তারপর রবিবার নিজের দফতরের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন। নেপালে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।