উত্তাপ চড়ছে বঙ্গ রাজনীতিতে। ২০২৫-এর দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ‘বাঙালি অস্মিতা’-কে হাতিয়ার করে লড়াইয়ে এবার  বিজেপিও। কারণ, তাদের পাখির চোখ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই কারণেই  দুর্গাপুজোর মতো একটি বাঙালির একেবারে নিজের উৎসবকে তারা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি। বিজেপির এই নতুন কর্মসূচির নাম ‘বাঙালি মিলন সমারোহ’ যা ‘দুর্গা সহায়’ কর্মসূচির অংশ।

এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য শুধু বাংলা নয়, দেশের প্রতিটি প্রান্তে এবং দেশের বাইরেও যেখানে দুর্গাপুজো হয় সেখানে বাঙালির পাশে দাঁড়ানো। এর জন্য একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে আছেন বিজেপির সর্বভারতীয় দুই সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত কুমার গৌতম এবং তরুণ চুঘ। প্রতিটি রাজ্যে একজন নেতাকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজেপির দাবি, এই উদ্যোগ বাঙালির ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানানোর জন্য। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ অবশ্য এবিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এটি সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ। তারা বাঙালিদের আবেগকে সম্মান জানাতে চাইছে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ‘বাঙালি অস্মিতা’কে কাজে লাগিয়ে ভোটে জয়ী হয়েছিল। এবার সেই একই পথে হাঁটতে চাইছে বিজেপিও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্প্রতি দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট মন্দির পরিদর্শনের বিষয়টিও এই রাজনৈতিক কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। সব মিলিয়ে, এবারের দুর্গাপুজো কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং তা পরিণত হয়েছে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক নতুন রাজনৈতিক রণক্ষেত্রে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘বাঙালি অস্মিতা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। শাসক এবং বিরোধী, উভয় দলই নিজেদের বাঙালি সংস্কৃতির রক্ষক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার বক্তৃতায় কলকাতার বিভিন্ন মন্দিরের কথা উল্লেখ করেন, যা থেকে বোঝা যায় বিজেপি এই বিষয়টিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। তৃণমূলের ‘বাঙালি অস্মিতা’র বিপরীতে বিজেপির ‘দুর্গা সহায়’ কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।