বন্যায় ডুবল লাহোর, ২৪ ঘণ্টায় পাঞ্জাব প্রদেশে মৃত ২২

IMG-20250830-WA0102

লাহোর: ভয়াবহ বন্যার কবলে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ। সিন্ধু ও তার উপনদীর জলে ডুবেছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। শুধু তাই নয়, ৪০ বছর পর বন্যার কোপে পড়েছে পাকিস্তানের লাহোর। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় এখানে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। ভয়াবহ এই বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করছে পাকিস্তানের একাংশ। দাবি করা হচ্ছে, সিন্ধুর জল ছাড়ার জেরে পরিস্থিতি এতটা গুরুতর আকার নিয়েছে। পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি জনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় পাঞ্জাব প্রদেশকে। গত এক সপ্তাহে ভয়ংকর বন্যার কারণে এই প্রদেশের ১৭০০ গ্রাম জলের নিচে চলে গিয়েছে। রেহাই পায়নি শিখদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র কর্তারপুর। সম্প্রতি জলমগ্ন কর্তারপুর সাহেবের ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়েছে। লাহোরের ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ মুসা রাজা বলেন, “৩৮ বছর পর এই প্রথম বন্যায় ডুবল লাহোর। ১৯৮৮ সালে এখানে শেষবার বন্য হয়েছিল। আজ সকাল ৭টায় ইরাবতী নদীতে বন্যার প্রবাহ ছিল ২ লক্ষ ২০ হাজার। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তাঁর দাবি, প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ভারত অতিরিক্ত জল ছাড়ার জেরে পূর্বাঞ্চলের তিন নদী শতদ্রু, ইরাবতী ও চন্দ্রভাগা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের বন্যার জন্য সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন পাক মন্ত্রী আহসান ইকবাল। তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জল অস্ত্র ব্যবহার করছে। যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাকিস্তানে শুরু হয়েছে, তার মোকাবিলা করা সম্ভব শুধুমাত্র প্রতিবেশীর সহযোগিতায়। ভারতের উচিত ছিল, বিষয়টিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করে পাকিস্তানের সঙ্গে একত্রে এর মোকাবিলা করা। কিন্তু তা না করে তারা হঠাৎ ভয়ংকরভাবে জল ছাড়ছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে জল অস্ত্র প্রয়োগ করছে।” যদিও সূত্রের খবর প্রতিবার জল ছাড়ার আগে পাকিস্তানকে আগাম বার্তা পাঠানো হয়েছে ভারতের তরফে। উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ও ২৬ মৃত্যুর ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তির উপর স্থগিতাদেশ। পূর্বে সিন্ধু জল কমিশনের মাধ্যমে জল ছাড়ার বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হত। তবে জল ছাড়ার পূর্বে এখনও পাকিস্তানকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। সেই মতো আড়াই লক্ষের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পাকিস্তানের তরফে। চলছে উদ্ধারকাজও। এদিকে রিপোর্ট বলছে, পাঞ্জাব প্রদেশের পাশাপাশি গোটা পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠেছে। বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে সেখানে এখনও পর্যন্ত ৪০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement