বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছে নির্বাচন কমিশন।নাগরিকত্ব প্রমাণে কোন নথি পেশ করতে হবে, সেই নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক। এস আই আর-এর বিরোধিতা করে প্রায় রোজই আওয়াজ তুলছে কংগ্রেস সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই প্রেক্ষাপটেই সোনিয়া গান্ধিকে নিয়ে গুরুতর অভিযোগ আনল বিজেপি। খাতায়কলমে ভারতের নাগরিক হওয়ার আগেই নাকি ভোটার তালিকায় নাম উঠে গিয়েছিল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধির। বুধবার দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডলে এই অভিযোগ এনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য। তাঁর অভিযোগ, নাগরিক হওয়ার আগেই ভোটার তালিকায় নাম ছিল সোনিয়া গান্ধির। মালব্যর সুরে সুর মিলিয়েছেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরও। বিজেপির দাবি, ১৯৮০ সালে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হয়েছিল সোনিয়া গান্ধির। যদিও তিনি আরও তিন বছর পরে ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে ১৯৮০ সালের দিল্লির একটি বুথের তালিকার ছবি পোস্ট করেছেন মালব্য। সেই তালিকায় দেখা গিয়েছে সোনিয়া গান্ধির নাম।মালব্যর পোস্টে সফদরজং রোডের ১৪৫ নম্বর বুথের তালিকার ছবি দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, সঞ্জয় গান্ধি, সোনিয়া গান্ধি এবং মানেকা গান্ধির নাম রয়েছে। মালব্য দাবি করেছেন, ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকা সংশোধন করার সময় সোনিয়ার নাম যুক্ত করা হয়। তিনি আরও দাবি করেছেন, জনগণের বিরোধিতার মুখে সেই নাম ১৯৮২ সালে বাদ দেওয়া হলেও ১৯৮৩ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে ফের তালিকাভুক্ত করা হয়। যদিও ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের নাগরিকত্ব পান সোনিয়া। মালব্যর কথায়, বেআইনি ভাবে সোনিয়ার নাম ভোটার লিস্টে তোলা হয়। তিনি আরও দাবি করেন, এই কারণেই রাহুল গান্ধি এসআইআর-এর বিরোধিতা করে অবৈধ ভোটারদের ভোটাধিকার দিতে চাইছেন। ১৯৪৬ সালে ইতালিতে জন্ম সোনিয়ার। ১৯৬৮ সালে রাজীব গান্ধির সঙ্গে বিবাহের পর গান্ধি পরিবারের অংশ হয়ে ওঠেন ইতালির মেয়ে। বিজেপির দাবি, ১৯৮০ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রথম বার নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম ওঠে সোনিয়ার। সে সময় গান্ধি পরিবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিরর সরকারি বাসভবনেই থাকত। বিজেপির আরও দাবি, ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সোনিয়ার নাম ভোটার তালিকাভুক্ত ছিল। অথচ তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান ১৯৮৩ সালে। এই সব তথ্য সামনে এনে অমিত মালব্য লেখেন, ‘‘এটি স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন। ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হতে গেলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হয়। ১৯৮২ সালে বিতর্ক ও সমালোচনার জেরে সোনিয়ার নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তাঁর নাম ফের তালিকাভুক্ত হয়।’’ অমিতের দাবি, সোনিয়ার নাম যখন দ্বিতীয় বার ভোটার তালিকায় ওঠে, তাতেও একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। ১৯৮৩ সালের ১ জানুয়ারির আগে নাগরিকত্ব পেলে তবেই সে বছর নাম ওঠার কথা। অথচ সোনিয়া ভারতের নাগরিক হন ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে। অমিতের ওই পোস্টের পরেই সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ সম্প্রতি রাহুল গান্ধি এনেছেন, তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য এবং ভুল পরিসংখ্যান’।