ভোটে কারচুপি কমিশনের, অভিযোগ রাহুলের

6894982696221-rahul-gandhi-has-made-a-serious-allegation-of-vote-theft-against-the-election-commission-071011541-16x9

চলতি বছরেই বিধানসভা ভোট রয়েছে বিহারে। তার আগে এসআইআর-এর মাধ্যমে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই ইস্যুতে কয়েক সপ্তাহ ধরেই সরব হয়েছে কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি। এই আবহে কয়েক দিন আগেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি দাবি করেছিলেন, ভোট চুরি নিয়ে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটাবেন তিনি। সেইমতোই বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ আনলেন তিনি। তাঁর দাবি, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে কারচুপি করেছে নির্বাচন কমিশন। রাহুল গান্ধির অভিযোগ, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের নাম তোলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে কংগ্রেসের ফলাফলের উদাহরণ টেনে দাবি করেন, ‘‘বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভয়ঙ্কর চুরি হয়েছে। সেখানে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে।’’ রাহুলের কথায়, “আমরা জানি ভোটে কারচুপি হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই প্রমাণ হাতে পাচ্ছিলাম না। তখনই চুরির প্রক্রিয়া খুঁজতে টিম তৈরি করি। বিশাল প্রিন্ট আউট নিয়ে এক বিধানসভা নির্বাচনের লিস্ট নিয়ে ভুয়ো ভোটার খোঁজার চেষ্টা করি। সাত মাস সময় লাগে। সফট কপি পেলে সেটা এক সেকেন্ডে হয়ে যেত। তখন বুঝলাম কেন ওরা সফট কপি দেয় না।” রাহুল বলছেন, “কমিশন কিছুতেই ডিজিটাল ভোটার রোল দিতে চায় না। সিসিটিভি ফুটেজের অ্যাকসেস দিতে চায় না।” রাহুলের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট ৪৮টি আসনের মধ্যে ৩০টি পেয়েছিল। তার ঠিক পাঁচ মাস পরে বিধানসভা নির্বাচন যখন হল, তখন দেখা গেল ইন্ডিয়া জোট ৫০-এর গণ্ডিও পেরোতে পারল না! আর এই দুই রাজ্যের উদাহরণ তুলেই ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন রাহুল।লোকসভার বিরোধী দলনেতার আরও দাবি, কংগ্রেস একটি অন্তর্তদন্ত চালিয়েছিল। সেই অন্তর্তদন্তে দেখা গিয়েছে, এক লক্ষেরও বেশি ভুয়ো ভোটার, ভুয়ো ঠিকানার মতো বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে কর্নাটকের মহাদেবপুরা কেন্দ্রে। রাহুল আরও দাবি করেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। কংগ্রেস প্রার্থী মনসুর আলি খানা বেশির ভাগ সময়ে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হতেই দেখা গেল বিজেপি প্রার্থী পিসি মোহন খুব সামান্য ভোটেই জিতেছেন।
নির্বাচন কমিশন কেন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেনি, সেই নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। রাহুলের প্রশ্ন, সঠিক ভোটাররা কি ভোট দিতে পারছেন? ভোটার তালিকায় তা হলে ভুয়ো ভোটারের নাম জোড়া হয়েছে? তাঁর অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে। তার জন্য নির্বাচনে হেরেছে কংগ্রেস। ৪০ লক্ষ রহস্যময় ভোটারের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। পাঁচ বছরে মহারাষ্ট্রে যে ভোটারের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে, পাঁচ মাসের মধ্যে হঠাৎ তার থেকে বেশি ভোটার কোথা থেকে এলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন রাহুল। ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের জবাব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। রাহুলের দাবি, নির্বাচন কমিশনের জানানো উচিত, ভোটার তালিকা ঠিক ছিল, না কি সেখানে কোনও ত্রুটি ছিল।
রাহুলের আরও অভিযোগ, দেশে ভুয়ো ভোট হচ্ছে। এই ভোট চুরি ধরতে অনেক সময় লেগেছে তাঁদের। কংগ্রেস নিজের মতো করে ভোটার তালিকা নিয়ে তদন্ত করেছে পাঁচটি স্তরে। ছ’মাস ধরে এই তদন্ত চালিয়েছেন তাঁরা। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রসঙ্গ তুলে লোকসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, ওই লোকসভা কেন্দ্রের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে সাড়ে ছ’লক্ষ ভোটের মধ্যে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে। দলের অন্তর্তদন্তে এটা ধরা পড়েছে যে, এক লক্ষেরও বেশি ভোটার ভুয়ো। যাঁদের ঠিকানাতে ত্রুটি ধরা পড়েছে। ভোটার তালিকায় যে বড় রকমের কারচুপি হয়েছে, সেটা জোর গলায় দাবি করেছেন রাহুল।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement