২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে কড়া হাই কোর্ট

IMG-20250717-WA0123

প্রতি বছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে শহিদ সমাবেশ করে তৃণমূল। সেই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ধর্মতলা চত্বরে প্রচুর কর্মী-সমর্থকদের সমাগম হয়। তাতে ওই এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এবার এই বিষয়টি নিয়েই উষ্মা প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে আদালতের প্রশ্ন, রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি কত দিন সহ্য করতে হবে? ধর্মতলায় কেন একটি দলকেই রাজনৈতিক কর্মসূচি করার অনুমতি দেওয়া হয়, এই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কয়েক জন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। সেই শুনানিতেই ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে কড়া অবস্থান নিতে দেখা যায় আদালতকে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে মুচলেকা দিয়ে বলতে বলুন যে কোনও যানজট হবে না, মানুষ কতদিন সহ্য করবেন? যদিও রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ২১ জুলাইয়ের আগে মামলা হয়, তারপর মামলা নিয়ে তারা ভুলে যান, কতদিন এসব চলবে? দুর্গাপুজো, ব্রিগেডের সভা, রানি রাসমণিতে যখন কোনও কর্মসূচি হয় তখনও যানজট হয়। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এ দিন জানান, এই জায়গায় ভবিষ্যতে সভা হবে কি না, সেটা নিয়ে দীর্ঘ শুনানি করতে হবে। কারণ এই একটা জায়গায় নির্দিষ্ট একটা সংগঠন সুবিধা পাবে, সেই নিয়ে বিবাদ চলতে থাকবে, সেটা হবে না। তিনি বলেন, ‘এ বার শুধু সময়ের কারণে এই জায়গা বদল করতে বলতে পারছি না। তবে আগামী বছর এই জায়গা বদল করে অন্য কোনও জায়গায় সভা করবে, সেই লিখিত মুচলেকা এ বার দিতে হবে।’ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বলেন, ‘তিন দশক ধরে এটা চলছে। এই মামলা খারিজ করা হোক। এটা অভিসন্ধিমূলক মামলা। অ্যাটেনশন পাওয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।’ যদিও মামলাকারীর আইনজীবী জানান, এর আগে রাজ্যই অন্য একটা মামলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা নিয়ে ব্যস্ত দিনে যানজটের অভিযোগ তুলে সভায় আপত্তি করেছিল। পুলিশ কাল বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, ভোর চারটে থেকে রাত পর্যন্ত ওইদিন সব ভারী গাড়ি শহরে ঢোকায় বিধিনিষেধ। সওয়াল-জবাব পর্বে তৃণমূলের আইনজীবীর তরফে বলা হয়, ওই জায়গাকে নিয়ে একটা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বিচারপতি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন জায়গা নিয়ে আবেগ থাকতে পারে। আমার যত দূর মনে পড়ছে, কোনও এক বছর ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি ব্রিগেডে হয়েছিল। এ ভাবে রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি হবে, এটা কত দিন সহ্য করতে হবে?” বিচারপতির মন্তব্য, “আমি বিভিন্ন মামলায় বলেছি রাস্তার এক তৃতীয়াংশ ছেড়ে রেখে কর্মসূচি করতে হবে। সকাল ১১টার পর কর্মসূচি করতে বলুন। ওই সময় সবাই অফিস যান। ওই সময়টা ছেড়ে দিন।” চলতি বছরের কর্মসূচি না-আটকালেও তিনি কিছু শর্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি ঘোষ। পরের বছর থেকে কর্মসূচির জন্য বিকল্প জায়গার খোঁজ করতে বলেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ, ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির জন্য ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত পুলিশ যা যা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তা শুক্রবার আদালতে পেশ করতে হবে। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement