কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও এক। এবার গ্রেপ্তার করা হল কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকে। অপরাধ ঘটার সময় তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন। নির্যাতিতার বয়ানেই উঠে এসেছে সেই তথ্য। এই নিয়ে কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।গত ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের শিকার হন প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মূল অভিযুক্ত কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র ও অস্থায়ী কর্মী। তাঁকে অপরাধে মদত দিয়েছিল কলেজেরই দুই ছাত্র। নির্যাতিতা থানায় অভিযোগ জানানোর পর, ২৬ জুন তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করা হয়। এবার এই তালিকায় যোগ হল কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ও।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয় বছর পঞ্চান্নর ওই নিরাপত্তারক্ষীকে। তাঁর বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, এই নিরাপত্তারক্ষী সত্যি কথা বলছেন না। তিনি কোনও তথ্য লুকানোর চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত, নির্যাতিতাকে এই গার্ড রুমেই নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ওই ছাত্রী তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, কসবা থানায় দায়ের করা অভিযোগে নির্যাতিতার দাবি, কলেজের মূল ফটক আটকে দিয়ে সিকিউরিটি গার্ডের ঘরে তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে মারধর করা হয়। সেই সময়ে তাঁর মাথাতে আঘাত লাগে। ধৃত পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনাটি দেখা সত্ত্বেও নির্যাতিতাকে তিনি কোনও ভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি। এর পরেই তদন্তকারীদের স্ক্যানারে উঠে আসে ওই নিরাপত্তা রক্ষীর নাম। তদন্তে নেমে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।শুক্রবারই প্রশ্ন উঠেছিল, বুধবারের ঘটনা সম্পর্কে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীরা সম্পূর্ণ অবগত থাকলেও তাঁরা এখন কোথায়? পুলিশ ওই গার্ডদের খোঁজ শুরু করেছে কি না, স্বভাবতই উঠেছিল সে প্রশ্নও। পিনাকী গ্রেপ্তার হওয়ায় মূল অভিযুক্ত মনোজিতের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’র বিষয়টি ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। আপাতত যে সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, সেগুলি হল,পিনাকী ছাড়াও আর কোনও সিকিউরিটি গার্ড ঘটনাস্থলে বা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিলেন কি না সে ব্যাপারেও। সঙ্গে খোঁজ চলছে ওই সিকিউরিটি গার্ড কোন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তা নিয়েও। পুলিশি তদন্তে আরও জানা গিয়েছে যে ঘটনার সময় নির্যাতিতা, তিন অভিযুক্ত ছাড়াও আরও কয়েকজন কলেজে উপস্থিত ছিলেন। তাদের ভূমিকা কী ছিল, তারা গণধর্ষণের ঘটনা জানতেন কি না, এই বিষয়ে কাউকে জানিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নির্যাতিতা তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেছিলেন যে ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছিল। অভিযুক্তরা এই ভিডিয়ো অন্য কাউকে পাঠিয়েছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই মোবাইল থেকে অন্য কাউকে ভিডিয়ো পাঠানো হয়েছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।