স্বাধীনতার ৭৬ বছর পর প্রথমবার বিদ্যুৎতের আলো পৌঁছাবে সীমান্তের খারিজা হরিদাস ও কোনামুক্তা গ্রামে

1750424696659

দিনহাটা: স্বাধীনতার ৭৬ বছর পর প্রথমবার বিদ্যুৎতের আলো পৌঁছাবে দিনহাটার সীমান্তের একাধিক গ্রামে। দিনহাটা-১ ব্লকের সীমান্ত গ্রাম খারিজা হরিদাস ও কোনামুক্তা গ্রামে দীর্ঘ বছর ও বিদ্যুৎ না আসায় এলাকার বাসিন্দাদের ভরসা লন্ঠনের আলো। অবশেষে এই এলাকাগুলিতে বিদ্যুতের তার বসায় এবং খুব শীঘ্রই বিদ্যুৎ সংযোগ হতে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।ফলে খুশি এলাকার বাসিন্দারা।সীমান্ত সংলগ্ন ওই দুই গ্রামের মানুষ গুরুত্বপূর্ণ পরিসেবা থেকে বঞ্চিত থাকায় সেখানকার বাসিন্দারা স্থানীয় পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস থেকে বিদ্যুৎ দপ্তরে বছরের পর বছর ধরে জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে তাদের সেই আন্দোলনের সফলতা মিলতে চলছে। দীর্ঘ ৭৬ বছর বাদে অবশেষে সেই বিদ্যুৎতের আলো পৌঁছাবে খারিজা হরিদাস খামার ও কোনামুক্তা গ্রামে। স্বভাবতই দীর্ঘদিন বাদের বিদ্যৎতের আলো দেখতে পাওয়ার আশায় যার পর নাই খুশি গ্রামের বাসিন্দা আনু মিঞা ও হাসানুর হকেরা।উল্লেখ্য দিনহাটা-১ ব্লকের গিতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত একটি সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে কাটাতারের ওপারে। এরফলে জরুরিকালীন এরকম অনেক পরিসেবা রয়েছে যা থেকে তারা আজও বঞ্চিত রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বিদ্যুৎ পরিসেবা।সীমান্তবর্তী করলাতে বিদ্যুৎ থাকলেও খারিজা হরিদাস খামার ও কোনামুক্তা গ্রামে সেই বিদ্যুৎতের লাইন কোনোদিনই পৌঁছায়নি। এরফলে রাত হলেই হরিদাস খামারের ওই লন্ঠনের আলো, নয়তো সৌর বাতির ওপর ভরসা করতে হত। স্থানীয় বাসিন্দা আনু মিঞার কথায়, এতদিন জমিতে জল দিতে ভরসা ডিজেল চালিত মেশিন।এরফলে তাদের খরচও হতো অনেক বেশী। এতদিন পর বিদ্যুৎ পৌছানোয় এখন বিদ্যুৎ চালিত মেশিনেই জলসেচ করতে পারবো।আরেক বাসিন্দা হাসানুর হকের কথায় সৌরবাতি দিয়ে আলো জ্বললেও ফ্যান চালানো যেতো না।এরফলে তীব্র গরমে ছোটো ছেলে মেয়েদের নিয়ে কষ্টেই দিন কাটাতে হতো।আন্দোলনকারী আমিনূর খন্দকার দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে কাটা তারের ওপারে থাকা ভারতীয় বাসিন্দাদের বিদ্যুৎতের পরিসেবা চেয়ে আন্দোলন চলছিলো। অবেশেষে লাইন টানার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায়, আমরা এবার নিশ্চিত বিদ্যুৎ পৌঁছাবে।এবল সেইসাথে আমাদের লড়াই সার্থক হবে।গিতালদহ-১ এর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা অঞ্চল সভাপতি আশাদুল হকের কথায় কাটা তারের ওপারে থাকা বাসিন্দারা ভারতীয় হয়েও নূন্যতম সুযোগ সুবিধা পায়না। বিশেষ করে বিদ্যুৎ এর মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিসেবা থেকে এতদিন তারা বঞ্চিত ছিলো। যদিও গত পাঁচবছর আমরা বিএসএফ, বিডিও, বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকদের সাথে দিনের দিন আলোচনা করেছি। অবশেষে খারিজা হরিদাস ও কোনা মুক্তা গ্রামে বিদ্যুৎ এর লাইন পৌঁছেছে।বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের ডিভিশনাল ম্যানেজার কল্যাণ বর সরকার, ওকরাবাড়ি বিদ্যুৎ বিভাগের স্টেশন ম্যানেজার গুরু গোপাল বানার কথায় ওই এলাকাগুলিতে লাইন টানার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।লাইন টানতে গিয়ে আমাদের কাটা তারের ওপারে মোট পাঁচটি পোল বসাতে হয়েছে।এমনকি লাইন নদীর ওপর দিয়েও গিয়েছে। বাসিন্দারা মিটার ঘর তৈরি করলেই লাইন চাপিয়ে দেওয়া হবে।খুব শীঘ্রই আলোও পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে।বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ দাস বলেন, বিদ্যুহীন গ্রামগুলিতে যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয় তার জন্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। আশা করছি ওই দুই গ্রামে খুব দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement