কুলতলী: বাঘের হানায় স্বামীর মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন ক্ষতিপূরণ মিলছিল না। শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুলতলির শান্তিবালা নস্কর। হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেয় বন দফতর। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমার টাকা চেয়ে ব্যাঙ্কেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে সেই টাকা নিয়েও নানা টালবাহানা শুরু হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়ে বিমার টাকা আদায় করে আনলেন শান্তিবালা। সম্প্রতি ক্ষতিপূরণ-সহ বিমার টাকা তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে ব্যাঙ্ক।বছর কয়েক আগে সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল শান্তিবালার স্বামী লখাই নস্করের। বন দফতরে আবেদন করেও ক্ষতিপূরণ না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শান্তিবালা। আদালতের নির্দেশে বন দফতর শান্তিবালাকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়। পরে অনেকেই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বাঘের হামলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছিলেন শান্তিবালাই।পরে প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার টাকার জন্যেও আবেদন করেন শান্তিবালা। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলে এই বিমা মেলে। এর জন্য অ্যাকাউন্ট থেকে বছরে ২০ টাকা করে কাটা হয়। অ্যাকাউন্ট মালিকের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা পান পরিবারের সদস্যরা। কুলতলির কৈখালীতে স্টেট ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকউন্ট ছিল লখাইয়ের। স্বামীর মৃত্যুর পর তাই বিমার টাকার জন্য ওই শাখায় আবেদন করেছিলেন শান্তিবালা। কিন্তু অভিযোগ, টাকা দিতে নানা টালবাহানা করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এর পর মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর সাহায্যে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হন শান্তিবালা। ক্রেতা সুরক্ষা দফতর বিমার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি বিমার টাকা দিতে দেরির ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও মামলা লড়ার খরচ হিসেবে আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক শান্তিবালার হাতে সেই টাকা তুলে দিয়েছে।শান্তিবালা বলেন, “অনেক লড়াই করে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছিলাম। বিমার টাকাটা পেতেও অনেক লড়াই করতে হল। স্বামীই ছিলেন প্রধান রোজগেরে। এখন দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার। টাকাটা পেয়ে সুবিধা হবে।
এপিডিআর-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল বলেন, “এই বিমার টাকাটার বিষয়ে অনেকে জানেনই না। শান্তিবালা দেবীই প্রথম লড়াই করে আদালত থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে এনে বহু বাঘ আক্রান্ত পরিবারকে পথ দেখিয়েছেন। আমরা পাশে ছিলাম। এবার এই বিমার টাকা আদায়ের ক্ষেত্রেও উনি পথ দেখালেন। এর ফলে আগামী দিনে বাঘে আক্রান্ত পরিবারগুলির কিছুটা সুরাহা হবে।স্টেট ব্যাঙ্কের কৈখালি শাখার ম্যানেজার সঞ্জয় পুরকাইত বলেন, “বিমার বিষয়টা বিমা কোম্পানি দেখে। যতদূর জানি, নথিপত্র সংক্রান্ত কিছু সমস্যায় টাকাটা আটকে ছিল।