বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে মোদি

IMG-20250504-WA0308

নয়াদিল্লি: সময় পেরোচ্ছে। দেশ ফুঁসছে। ভাঙছে ধৈর্যের বাঁধ। পহেলগাঁও হামলার বদলা আর কবে? প্রশ্ন যেমন জোরাল হচ্ছে, তেমনই জোরাল হচ্ছে প্রস্তুতিও। একদিকে দিল্লিতে একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে সেনা প্রস্তুত হচ্ছে যুদ্ধের জন্য। শনিবারই কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকের বিষয়বস্তু রীতিমতো সিক্রেট রাখা হয়েছে। এরপরই রবিবার সকালে বায়ুসেনা প্রধান অমলপ্রীত সিং এবং বায়ুসেনার অন্য শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ বায়ুসেনার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয় দুজনের। তবে এই বৈঠকের বিষয়বস্তুও সিক্রেট। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বায়ুসেনা ইতিমধ্যেই পাক সীমান্তে মহড়া শুরু করেছে। আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারত পুরোপুরি যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। জব্বলপুরের খামারিয়ার অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টারির কর্মীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই অস্ত্র কারখানার যেসব কর্মী আগে থেকে ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদেরও জরুরি ভিত্তিতে ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আগামী দিনেও কোনও কর্মীকে ছুটি দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় অস্ত্র তৈরির কাজটা শুরু করে দিল ভারতীয় সেনা? উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পর ১২ দিন পেরিয়েছে। অথচ এখনও মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে ২৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা জঙ্গিরা। এ পর্যন্ত কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি অভিযান ও ধরপাকড় চালিয়েও হামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার বা নিকেশ করা যায়নি। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল দুপুরে বৈসরণ ভ্যালি রিসর্টে হামলা চালায় চারজন। তার মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি। বাকি দুজন কাশ্মীরের বাসিন্দা। চারজনের স্কেচও প্রকাশ হয়েছে। এদের পথপ্রদর্শক হিসাবে আদিল কঠোর নামের এক জঙ্গির নামও প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এর বাইরে আর কারা যুক্ত সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসবের মধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধের মেজাজে ভারত।এদিকে তিন দিন আগে তাঁর এক্স অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে ভারত। এবার ফের নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে হুমকি দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তাঁর হুঁশিয়ারি, ভারত যদি সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করে তাহলে পাকিস্তান ভারতে হামলা করবে। পাক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”সিন্ধু নদের উপরে যে কোনও ধরনের নির্মাণকাজ সিন্ধু জলচুক্তির লঙ্ঘন এবং তা পাকিস্তানের স্বার্থের পরিপন্থী বলেই ধরা হবে।” তাঁর মতে, আগ্রাসন মানে কেবলই গোলাগুলি চালানো নয়। এর আরেক রূপ হল জল বন্ধ করে দেওয়া, যা তৃষ্ণার কারণে মৃত্যুকেও ডেকে আনতে পারে। এরপরই তিনি হুমকি দেন, যদি ভারত তেমন কোনও নির্মাণকাজ করতে যায় তাহলে পাকিস্তান সেই প্রচেষ্টাকে ধূলিসাৎ করে দেবে। পাশাপাশি তাঁর হুঁশিয়ারি, ভারত একতরফা ভাবে এমন কাজ করতে পারবে না। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর প্রতিবাদ করবে। তাঁর দাবি, মোদি সরকার পহেলগাঁও নিয়ে তাদের অভিযোগের সমর্থনে কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে নির্বাচনী ফায়দা তুলতেই ‘নাটক’ করছেন এমন কটূক্তিও করতে দেখা যায় তাঁকে। উল্লেখ্য, খাজা আসিফকে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হয়, পাকিস্তান যে দীর্ঘ সময় ধরে সন্ত্রাসকে মদত দিয়ে চলেছে তা তিনি অস্বীকার করতে পারেন কিনা। জবাবে খাজা জানিয়েছিলেন, “সন্ত্রাসবাদকে অর্থ ও মদত দেওয়ার মতো ঘৃণ্য কাজ গত তিন দশক ধরে করে এসেছি আমরা।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এই কাজ পাকিস্তান করেছে, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ পশ্চিমের দেশগুলির জন্য। এটা আমাদের ভুল ছিল। যার ফল আমাদের ভুগতে হচ্ছে।” তাঁর এহেন মন্তব্যের পরই খাজার এক্স হ্যান্ডল ব্লক করে দেওয়া হয় ভারতে। কিন্তু এবার পাক সংবাদমাধ্যমে ফের ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করলেন।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement