শান্তিপ্রতিষ্ঠার পক্ষে নওয়াজ, শাহবাজকে পরামর্শ

IMG-20250428-WA0256

পহেলগাঁও কাণ্ডে ক্রমশ পারদ চড়ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে।জঙ্গি হামলার ঘটনায় কড়া জবাব দেওয়ার কথা বলেছে দিল্লি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও। শাহবাজ শরিফ সরকারের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, ভারত হামলা চালাবে জবাব দিতে দেরি করবে না পাকিস্তানও।কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসী পদক্ষেপ চান না পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াক শরিফ।পহেলগাঁও হামলা ও উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পিএমএলএন প্রধান নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সূত্রের খবর, কূটনৈতিক স্তরে পদক্ষেপ নিয়ে ২ দেশের মধ্যে শান্তিপ্রতিষ্ঠা চান শরিফ। ভাই শাহবাজকে তেমনই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে কোনও আগ্রাসী পদক্ষেপ চান না নওয়াজ শরিফ। কূটনৈতিকভাবে দু’দেশের মধ্যে সমস্যার সমাধানের উপর জোর দিয়েছেন নওয়াজ শরিফ। সূত্রের খবর, ভাই শাহবাজ়কে ‘ভারত-বিরোধী মন্তব্য’ থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন নওয়াজ়।জানা গিয়েছে, রবিবার নওয়াজ়ের সঙ্গে দেখা করতে যান শাহবাজ়। লাহোরে নিজের পারিবারিক বাড়িতে রয়েছেন নওয়াজ়। সেখানে তাঁর সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন শাহবাজ় এবং পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ়। সেখানেই নওয়াজ়কে পহেলগাঁও কাণ্ড-পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের বিষয়ে অবহিত করেন শাহবাজ়। সূত্রের খবর, ভারতের বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি, সেই কথাও জানান তিনি। এর পরেই নওয়াজ় শরিফ তাঁকে পরিস্থিতি ‘মোকাবিলা’ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেন বলে খবর। নওয়াজ় ভাইকে জানিয়েছেন, ‘কূটনৈতিক পথেই’ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চাপানউতর কমতে পারে। দুই দেশের মধ্যে সমস্যার সমাধান হতে পারে। নওয়াজ়-ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের দাবি, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চাইছেন দুই দেশের সম্পর্কে স্থিতি আসুক। পহেলগাঁও কাণ্ডের পরবর্তী পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী ভারতের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন। তাঁদের মুখে লাগাম পরানোর পরামর্শও ভাইকে দিয়েছেন নওয়াজ়।২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। এই ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাকিস্তানিদের স্বল্পমেয়াদি ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করেছে। পাকিস্তানও পাল্টা কিছু পদক্ষেপ করেছে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করেছে। এই আবহে পাকিস্তানের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী ভারত-বিরোধী মন্তব্য করেছেন। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খোয়াজা আসিফ ভারতের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির প্রতিক্রিয়া আমাদের কাছে আশ্চর্যজনক নয়। ওই অঞ্চলে, বিশেষত আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’’ পাকিস্তান সরকারের আর এক মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন ভারতকে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা জল বন্ধ করলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকুক। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সাজিয়ে রাখার জন্য নয়।’’ পাকিস্তানি নেতা বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারিও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ভারত জল বন্ধ করলে রক্ত ঝরবে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের নেতা-মন্ত্রীদের এই ধরনের মন্তব্য পছন্দ করছেন না নওয়াজ়। তিনি তাঁদের নম্র হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে খবর। প্রসঙ্গত, নওয়াজ়ের আমলেই ১৯৯৯ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কার্গিল যুদ্ধ হয়েছিল। ওই যুদ্ধেও সায় ছিল না বলে বছর কয়েক আগে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন নওয়াজ়। এ-ও দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফের কার্গিল পরিকল্পনায় সায় না দেওয়ার জন্যই নাকি তাঁকে পরে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল। এ বার নিজের ভাইকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে স্থিতি ফেরানোর পরামর্শ তিনি দিয়েছেন বলে খবর।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement