পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় তোলপাড় দেশ। পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। এই আবহে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের পক্ষে সওয়াল করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি দাবি জানালেন, ‘ওরা যে ভাষা বোঝে সেই ভাষায় সবক শেখানোর সময় এটা।’ এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লেখেন, “গত কয়েকদিন ধরে, আমি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষস্তরের কার্যকলাপের দিকে নজর রাখছিলাম। পহেলগাঁওয়ে এই নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার ত্রুটিগুলি গভীরভাবে খতিয়ে দেখার পরিবর্তে, তারা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে উপকৃত করবে এমন একটি আখ্যানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী বলে মনে হল। এখনই সময় এই ধরনের তুচ্ছ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই সমস্যার চিরতরে সমাধান করার। এটা আবার কোনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদের সময় নয়। ওরা যে ভাষা বোঝে সেই ভাষায় সবক শেখানোর সময় এটা। এটাই পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের সময়।”
পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় ইন্টেলিজেন্স-এর ‘ব্যর্থতা’-র কথা কার্যত মেনে নিয়েছে কেন্দ্র।এমনই দাবি বিরোধীদের। এরকম একটি নৃশংস জঙ্গি হামলার বিষয়ে কেন ইন্টেলিজেন্স ইনপুট মেনে চলা হলো না, সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দিকে অভিযোগ আঙুল তোলা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই অভিষেকের বক্তব্য, ‘আমি শেষ কয়েকদিন মূলধারার গণমাধ্যম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের আচরণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। পহেলগামে এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার পিছনে থাকা ত্রুটিগুলি তদন্ত করার পরিবর্তে, তারা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থে কথা বলে চলেছে।’ তুচ্ছ রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে বিষয়টির পর্যালোচনা করা উচিত বলে জানান তিনি।
পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীরে সন্ত্রাসদমন অভিযান জোরদার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। চলছে তল্লাশি। বিভিন্ন জায়গায় সেনা-জঙ্গি এনকাউন্টারও চলছে। পহেলগাঁও নাশকতার লিঙ্কম্যান সন্দেহে ১৪ জন জঙ্গির তালিকা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্রের দাবি, এদের বেশিরভাগই পাক অধিকৃত কাশ্মীর লাগোয়া জেলাগুলিতে হিজবুল, জইশ, লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনের কমান্ডার হিসেবে কাজ করে। বৈসারন ভ্যালিতে বেছে বেছে হিন্দু-নিধনের পর জঙ্গিদের খোঁজে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গলে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা, সিআরপিএফ ও জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। ২৬ জনের মৃত্যু ও ১৭ জন আহত হওয়ার পর পহেলগাঁওয়ে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা।উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পর একটি সর্বদল বৈঠকের আয়োজন করেছিল কেন্দ্র। সেই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা মেনেও নেয় কেন্দ্র। তবে, সন্ত্রাস দমনে কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে সব রাজনৈতিক দলই।