নয়া দিল্লি: বাংলাদেশে অপহরণ করে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে হিন্দু নেতা ভবেশচন্দ্র রায়কে! এই ঘটনায় শনিবার কড়া বিবৃতি দিল দিল্লি। খুনের ঘটনার নিন্দার পাশাপাশি মুহম্মদ ইউনুস সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করল ভারত। সাফ জানানো হল, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে ইউনুস সরকার। এমনকী হত্যাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। ভারতের তরফে বার্তা, “বাহানা নয়, ব্যবস্থা চাই। নিহত ভবেশচন্দ্র রায় দিনাজপুরের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের বিরাল শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। এই হিন্দু নেতাকে নৃশংস ভাবে হত্যার ঘটনায় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স হ্যান্ডেলে বিবৃতি দিয়েছেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নেতা ভবেশচন্দ্র রায়কে খুনের ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। এই হত্যাকাণ্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত নির্যাতনের জলজ্যান্ত উদাহরণ। আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটানো অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।” আরও বলা হয়েছে, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে অজুহাত দেখাবেন না। বাহানা নয়, ব্যবস্থা নিন। ভেদাভেদ না করে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সুরক্ষার ব্যবস্থা করুন।পুলিশের কাছে মৃত নেতার স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৪টে নাগাদ ভবেশবাবুর কাছে একটি ফোন আসে। তিনি বাড়িতে আছে কিনা তা জানার জন্যই ফোন করেছিল দুষ্কৃতীরা। এর ঠিক ৩০ মিনিটের মধ্যে দুটি বাইকে চারজন আসে। জোর করে ভবেশবাবুকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে নরাবাড়ি গ্রামে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ভবেশবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন।এই ঘটনায় নতুন করে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিরাল থানার ওসি আবদুস সবুর শুক্রবার জানান, “আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। মামলা দায়ের হয়েছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।” প্রসঙ্গত, বাংলাদেশরই এক রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পতনের পর মাত্র পাঁচ মাসে বাংলাদেশে খুন হয়েছে ৩২ জন হিন্দু। ১৩ জন সংখ্যালঘু মহিলাকে ধর্ষণ-গণধর্ষণ করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে ১৩৩টি মন্দির। বর্তমানে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই অভিযোগ।