ফের সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি। মঙ্গলবার ডিএ মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু সেই শুনানি হয়নি। আগামী এপ্রিল মাসে এই মামলা শুনতে পারে শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আইনি লড়াই করছেন সরকারি কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন। আপাতত এই মামলা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টে প্রথমবার ডিএ মামলা উঠেছিল। এ দিন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের এজলাসে এই মামলা ওঠে। মামলাটি পিছিয়ে গেলেও আশার আলো দেখছেন মামলাকারী সংগঠনের নেতৃত্ব। অন্যদিকে, ১ এপ্রিল থেকে রাজ্য সরকারের ঘোষণা করা ৪ শতাংশ বর্ধিত ডিএ কার্যকর হতে চলেছে। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানিয়েছে নবান্ন। বাজেট বক্তৃতার সময়েই রাজ্য সরকারি কর্মীদের চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ১ এপ্রিল থেকে এই বর্ধিত ডিএ কার্যকর হওয়ার কথা মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে নবান্ন। এর ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি পেয়ে হল ১৮ শতাংশ। পেনশনভোগীরাও সুবিধা পাবেন। তাঁদেরও ডিআর বৃদ্ধি পেয়ে হবে ১৮ শতাংশ। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টে আবার পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি। আগামী এপ্রিল মাসে এই মামলা শুনতে পারে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী এপ্রিল মাসে হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলকে বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘আপনাদের আর্জি কেন গ্রহণযোগ্য হবে, কেন খারিজ করব না?’’ বিচারপতি করোল জানান, কেন রাজ্যের আবেদন খারিজ করা হবে না, তা নিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন তাদের বক্তব্য জানাতে হবে। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানান শীর্ষ আদালতে। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরে ডিএ মামলার শুনানি হয়নি। এর জন্য একটা নির্দিষ্ট দিন ধার্য করা হোক।এর আগে বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে ডিএ মামলা ছিল। শুনানি শেষ হওয়ার আগেই ওই বিচারপতি অবসর নেন। ফলে গত তিন মাস ধরে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠেনি। এখন বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে গেল ওই মামলাটি। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার রায় দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে শীর্ষ আদালতে রাজ্যের আবেদনটি দায়ের হয়। প্রায় তিন বছর কেটে গিয়েছে। এখনও ওই মামলার নিয়মিত শুনানি শুরু হয়নি। এর আবহে আবার পিছিয়ে গেল মামলার শুনানি। আগামী ২২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে হতে পারে সেই শুনানি। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে এ রাজ্যের কর্মীদের ডিএর ফারাক এখনও ৩৫ শতাংশ। রাজ্য সরকার ডিএ বৃদ্ধি কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরে এই ফারাক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকারি কর্মচারীদের বামপন্থী সংগঠনগুলি। ন্যায্য ডিএ-র দাবিতে আগামী ৭ থেকে ৯ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে সরকারি দফতরে ৩ ঘণ্টা ব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন একটি বাম সংগঠনের সদস্যেরা। তবে তৃণমূল কর্মচারী সংগঠন সরকারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের কর্মীদের ডিএ চার শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বর্ধিত ডিএ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করল নবান্ন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের কর্মীদের পাশাপাশি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, সরকার অধিকৃত, পঞ্চায়েত, পুরসভার কর্মীদেরও ডিএ বৃদ্ধি পেয়ে হল ১৮ শতাংশ। ১ এপ্রিল থেকে এই ডিএ পাবেন তাঁরা। সুবিধা পাবেন পেনশনভোগীরাও। তাঁদেরও ১ এপ্রিল থেকে ডিআর বৃদ্ধি পেয়ে হবে ১৮ শতাংশ। যদিও এই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছে বামপন্থী কর্মচারীদের সংগঠনগুলি।