রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত পাঁচ মাস ধরে বাংলাদেশের জেলে বন্দি রয়েছেন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তার গ্রেফতারির পরই উত্তাল হয়ে ওঠে পড়শি রাষ্ট্র। কবে তাঁর জামিন হবে, সেই আশায় দিন গুনছে সনাতনী সমাজ।রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি হতে পারে ইদের ছুটির পরে। আগামী ৩১ মার্চের পরে তাঁর জামিন সংক্রান্ত মামলাটি উঠতে পারে বাংলাদেশের হাই কোর্টে। এমনটাই জানালেন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ধৃত চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী অপূর্বকুমার ভট্টাচার্য। চিন্ময়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে বাংলাদেশের আদালতে। এনিয়ে শুধু বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বৃত্তেই নয়, তোলপাড় পড়ে এপার বাংলার হিন্দু সমাজেও। তাঁর জামিন খারিজের বিরোধিতায় সকলে গর্জে উঠে মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। নানা মহলের চাপ সামলাতে হাই কোর্টের দুই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কেন চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন হবে না, এনিয়ে রুলও জারি করা হয়। তবে চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী অপূর্বকুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আগামী মাসে ইদের ছুটির পর হাই কোর্টে মামলাটি শুনানির জন্য উঠবে।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশ হাই কোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আতোয়ার রহমান এবং মোহাম্মদ আলি রেজার বেঞ্চ চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন সংক্রান্ত মামলাটি শুনবেন। রবিবার চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী জানান, তাঁরা আশাবাদী মক্কেলের জামিনের বিষয়ে। বস্তুত, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কেন তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না, সেই প্রশ্ন এর আগেও উঠেছে বাংলাদেশের হাই কোর্টে। মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের কাছে সেই প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। এই আবহে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক ধর্মীয় সংগঠন মিলে গঠন করে ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’। ওই মিলিত মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র ছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ। তাঁর ডাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাবেশ আয়োজিত হয়। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকেই বাংলাদেশের দিকে দিকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাক্রমে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছিল ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। সেখানে আইনজীবী আলিফ খুন হন। হত্যার অভিযোগ ওঠে হিন্দু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। ১১ জনকে সরাসরি খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে ভাঙচুর, অশান্তির মামলায় গ্রেফতার আরও ৪০ জন। গত ৩ ডিসেম্বর আদালতে শুনানি থাকলেও জামাত-সহ কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনগুলির হুমকির জেরে চিন্ময়কৃষ্ণের পক্ষে কোনও আইনজীবী এজলাসে হাজির হতে পারেননি বলে অভিযোগ। গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মামলার শুনানি ছিল চট্টগ্রামের আদালতে। সে দিনও জামিনের আবেদন খারিজ হয়। তার পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি চিন্ময়ের জামিন বিষয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।