মহাকুম্ভের সাফল্য তুলে বিরোধীদের তোপ মোদীর

IMG-20250318-WA0251

মহাকুম্ভের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মহাকুম্ভের সাফল্যকে তুলে ধরে সংসদে বিরোধীদের খোঁচাও দিলেন তিনি। মঙ্গলবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘গোটা বিশ্ব মহাকুম্ভের মাধ্যমে ভারতের বিরাট স্বরূপ দর্শন করেছে। মহাকুম্ভ থেকে একতার অমৃত পেয়েছি আমরা।’ পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, ভারতের এই চেতনার উজ্জ্বল প্রতিফলন দেখা গিয়েছে মহাকুম্ভে। তবে সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরলেও একবারের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা যায়নি পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা। মঙ্গলবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে লোকসভায় বলতে ওঠেন তিনি। বক্তব্যের শুরুতেই মহাকুম্ভের সাফল্যের জন্য দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানান মোদী। তিনি বলেন, “প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভের সাফল্যের নেপথ্যে যাঁদের অবদান, দেশের সেই সব কোটি কোটি মানুষকে আমি নতমস্তকে প্রণাম জানাচ্ছি।”মহাকুম্ভের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে মোদী বলেন, “গোটা বিশ্ব ভারতের শক্তি দেখেছে। যাঁরা আমাদের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, মহাকুম্ভ তাঁদের জবাব দিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানান যে, মহাকুম্ভে ‘ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির উদ্‌যাপন’ হয়েছে। সাম্প্রতিক মরিশাস সফরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী জানান, সে দেশে তিনি পবিত্র গঙ্গাজল নিয়ে গিয়েছিলেন। মোদীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুরু হতেই বিরোধী বেঞ্চ থেকে হইচই শুরু হয়। স্পিকার ওম বিড়লা বিরোধীদের সংসদীয় নিয়মকানুনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা যায় না।” তার পরেও হইচই থামেনি। দুপুর ১টা পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেন স্পিকার। মঙ্গলবার সংসদে দাঁড়িয়েও মহাকুম্ভের প্রশংসা শোনা যায় মোদীর গলায়। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে এই প্রবিত্র উৎসবের সাফল্য ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। যাঁদের জন্য মহাকুম্ভের মতো বিরাট আয়োজন সফল হয়েছে সেই সকল কর্মী, পুণ্যার্থী ও উত্তরপ্রদেশের জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোদি বলেন, “ভগীরথ যেমন বহু চেষ্টার পর মা গঙ্গাকে মর্তে এনেছিলেন, মহাকুম্ভকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সেই একই চেষ্টা আমরা দেখেছি প্রয়াগরাজে। এই উৎসব আমাদের দেশাত্ববোধক চেতনাকে জাগিয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সামর্থ নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছিল তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে মহাকুম্ভের আয়োজন।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “মহাকুম্ভ থেকে একতার অমৃত পেয়েছি আমরা। দেশের সমস্ত প্রান্ত থেকে আসা মানুষ এক হয়ে গিয়েছেন প্রয়াগরাজের তীর্থক্ষেত্রে। আলাদা আলাদা জায়গা থেকে এসে মানুষ দেশের একজোট হয়েছেন, ‘আমি’ থেকে তাঁরা মিশে গিয়েছেন ‘আমরা’য়। এখানে ছোট-বড়োর কোনও পার্থক্য ছিল না। মহাকুম্ভ হয়ে উঠেছিল একতার এক অনন্য নজির। গোটা বিশ্বে যখন আমরা ভাঙন দেখছি বৈচিত্রের মাঝে ঐক্যের উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরেছে মহাকুম্ভ। গোটা বিশ্ব মহাকুম্ভের মাধ্যমে ভারতের বিরাট স্বরূপ দর্শন করেছে।”মহাকুম্ভের সাফল্য ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা দেশকে নতুন করে জাগিয়ে তোলে। যেমন চৈতন্যদেবের ধর্মীয় আন্দোলন, স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ভাষণ। স্বাধীনতা আন্দোলনেও এমন বহু মোড় এসেছে যা দেশবাসীকে প্রেরণা দিয়েছে স্বাধীনতার লক্ষ্যে পৌঁছতে। প্রয়াগরাজও তেমনই একটি মোড়।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “সমস্যা রয়েছে। তবে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে কোটি কোটি মানুষ প্রয়াগরাজে এসেছেন। মহাকুম্ভ দেখিয়েছে ভারতবাসী তাঁর হারানো গৌরব ও সংস্কৃতিকে পালন করছেন। এই সংস্কৃতিকে সম্মান করার প্রবণতা আগের তুলনায় বেড়েছে। যুব সম্প্রদায়ও ভারতের আস্থা ও সংস্কৃতিকে অবলম্বন করছেন।”তবে মহাকুম্ভের প্রশংসা করলেও মোদীর গলায় শোনা যায়নি মহাকুম্ভে নানা বিপত্তির কথা। অগ্নিকাণ্ডের পাশাপাশি হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩০ জনের। আর সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে বিরোধীরাও প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা নিশানা করতে ছাড়েননি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement