প্রধানমন্ত্রী ও ওমানের সুলতানের উপস্থিতিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর, বস্ত্র, কৃষিপণ্য ও গয়নায় লাভ
মাস্কাট: ভারত ও ওমান একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় বস্ত্র, কৃষিপণ্য ও চামড়াজাত সামগ্রীসহ ভারতের ৯৮ শতাংশ রপ্তানি ওমানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। অন্যদিকে, ভারত খেজুর, মার্বেল ও পেট্রো–রাসায়নিক পণ্যের মতো ওমানি পণ্যের ওপর শুল্ক কমাবে।
ভারত–ওমানের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করেন। মাস্কাটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং ওমানের বাণিজ্য, শিল্প ও বিনিয়োগ উন্নয়নমন্ত্রী কাইস বিন মোহাম্মদ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ওমান তাদের ৯৮ শতাংশেরও বেশি শুল্ক শ্রেণি (বা পণ্য শ্রেণি) তে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছে, যার আওতায় ওমানে ভারতের রপ্তানির ৯৯.৩৮ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত।
শুল্কের অবস্থা:
রত্ন ও গয়না, বস্ত্র, চামড়া, জুতো, ক্রীড়া সামগ্রী, প্লাস্টিক, আসবাবপত্র, কৃষিপণ্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও মোটরযানসহ সব প্রধান শ্রমনির্ভর খাতকে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭.৯৬ শতাংশ পণ্য শ্রেণিতে তাৎক্ষণিক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে। অপরদিকে, ভারত তাদের মোট শুল্ক শ্রেণি (১২,৫৫৬) এর মধ্যে ৭৭.৭৯ শতাংশে শুল্ক উদারীকরণের প্রস্তাব দিয়েছে, যা মূল্যমানের হিসাবে ওমান থেকে ভারতে আমদানির ৯৪.৮১ শতাংশকে অন্তর্ভুক্ত করে।
অর্ধেক কর্মী ভারত থেকে নিয়োগের অনুমতি:
এই চুক্তির আওতায় ওমান ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে তাদের ভারতস্থিত অফিস থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। ওমানের বৈশ্বিক পরিষেবা আমদানি ১২.৫২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ভারতের অংশ মাত্র ৫.৩১ শতাংশ। এটি প্রমাণ করে যে ওমানে ভারতীয় পরিষেবা প্রদানকারীদের জন্য বড় সুযোগ রয়েছে।
সংবেদনশীল পণ্য আলাদা শ্রেণিতে রাখা হয়েছে
নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার জন্য ভারত সংবেদনশীল পণ্যগুলোকে কোনো ছাড় না দিয়ে আলাদা শ্রেণিতে রেখেছে। বিশেষত কৃষিপণ্য—দুগ্ধজাত পণ্য, চা, কফি, রাবার ও তামাকজাত দ্রব্য, সোনা ও রুপার বুলিয়ন, গয়না, জুতো, ক্রীড়া সামগ্রীসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর পণ্য এবং বিভিন্ন নিম্নমানের ধাতব স্ক্র্যাপ এতে অন্তর্ভুক্ত।
প্রথাগত ওষুধ অন্তর্ভুক্ত:
ওমানের সঙ্গে এই এফটিএ-তে প্রথমবারের মতো ভারতের প্রথাগত ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে উপসাগরীয় দেশগুলোতে আয়ুষ পণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়বে। মাস্কাটে প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন— “একবিংশ শতাব্দীর ভারত সাহসী ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী দেশ।”









