এলওসি-তে সক্রিয় পাকিস্তানি জঙ্গি, অপারেশেন সিঁদুরের দ্বিতীয় ধাপের হুঁশিয়ারি বিএসএফ কর্তার

Live-5_1746676955955_1746765186746

জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানি জঙ্গিদের সক্রিয়তা আবারও ভারতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, জম্মু ও কাশ্মীরকে অশান্ত করতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাকিস্তানি জঙ্গিরা। নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে অন্তত ৬৯টি লঞ্চপ্যাডে প্রায় ১২০ জন জঙ্গি ঘাঁটি গেড়েছে। সুযোগ পেলেই তারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএসএফের আইজি অশোক যাদব। তবে তিনি জানান, বিএসএফের জি ইউনিট সীমান্ত বরাবর প্রতিটি ঘাঁটির উপর নজর রাখছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিও নজরদারিতে রয়েছে। তাঁর হুঁশিয়ারি—পাকিস্তান যদি আবার অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করে, তবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। পাশাপাশি তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, পাকিস্তান যদি কোনওরকম বাড়াবাড়ি করে তবে কড়া জবাব দিতে দ্বিতীয়বার ভাববে না ভারত। অপারেশন সিঁদুরের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফের সাফল্যে কথা তুলে ধরে বলেন, চলতি বছর বিএসএফ ও সেনার যৌথভাবে চারবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। এই অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ৮ জঙ্গির। এটি ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অংশ, যা চলতি বছরে বিএসএফ-এর বড় সাফল্য। এই পরিস্থিতি শুধু সামরিক নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেও গভীর তাৎপর্য বহন করছে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, ভারতীয় সেনা ও বিএসএফ গত কয়েক মাসে একাধিক অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও কার্যকর হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে, ড্রোন নজরদারিও। এছাড়াও ভারতীয় সেনার তরফ থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেন্সর ও নাইট-ভিশন প্রযুক্তি, চলছে যৌথ অভিযানও। আর এই এসব ব্যবস্থার ফলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে ভারতীয় বাহিনী দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তবে ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা—যেমন ফায়ারিং অ্যাঙ্গেল ও দূরত্ব সব লঞ্চপ্যাড ধ্বংসে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও জানান বিএসএফ আইজি।

একইসঙ্গে তিনি এও জানান, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জঙ্গি সক্রিয়তা বাড়ানো আসলে কূটনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল। ভারত যদি কঠোর জবাব দেয়, তবে তা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে। পাশাপাশি এটাও মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ সমস্যাকে আড়াল করতে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। এরপর ভারতের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হলে তা কূটনৈতিক বার্তা হিসেবেও কাজ করবে। তবে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনে এই অশান্তি সরাসরি প্রভাব ফেলে বলেও জানান বিএসএফ কর্তা। সঙ্গে এও জানান, অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় গ্রামাঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, সেনা অভিযানের সময় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তবে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী প্রযুক্তি ও কৌশলগত দক্ষতায় এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানি জঙ্গিদের সক্রিয়তা সীমান্তে অস্থিরতা বাড়াবে। তাই ভবিষ্যতে আরও উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন বিএসএফের এই কর্তা। সঙ্গে তিনি এও মনে করছেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক চাপ বাড়ানো দরকার। একইসঙ্গে তিনি এও জানান, সীমান্তবর্তী মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা জরুরি।

এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তে চলমান পরিস্থিতি কেবল সামরিক সংঘাত নয়, বরং রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন। পাকিস্তানি জঙ্গিদের সক্রিয়তা ভারতকে আরও সতর্ক হতে বাধ্য করছে। একইসঙ্গে, সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement