নয়াদিল্লি: এই উৎসবের মরশুমে, ভারত দীপাবলির আগাম উপহার পেয়েছে, কাগজে মোড়ানো নয়, বরং নীতির মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাম্প্রতিক জিএসটি হার হ্রাস দেশব্যাপী কেনাকাটার ঢেউ তুলেছে।  

নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং ভোগ্যপণ্যের উপর কম কর ঘরে ঘরে স্বস্তি এনেছে, বাজারকে উজ্জীবিত করেছে এবং ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে সমৃদ্ধ দীপাবলির জন্য আবহ তৈরি করেছে।মুদ্রাস্ফীতি আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে, সিপিআই মাত্র ১.৫৪শতাংশ , অন্যদিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঋণাত্মক (-২.৩শতাংশ) হয়েছে, যার ফলে পরিবারগুলি আরও বড় আকারে উৎসব উদযাপন করার আর্থিক স্বাধীনতা পেয়েছে। জিএসটি হার হ্রাসের সাথে সাথে দাম কমেছে এবং ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎসব এবং বিয়ের মরশুমের ঠিক আগে জিএসটি সংস্কার সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। উপভোক্তাদের মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে, এবং এর ফলাফল প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে।উৎসব এবং বিয়ের মরশুমে লেনদেন ৭ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে, যা ভারতে বছরের পর বছর ধরে সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের ঘটনা।ডিজিটাল পেমেন্ট রাতারাতি ১০ গুণ বেড়ে ২১ সেপ্টেম্বরের ১.১৮ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের ১১.৩১ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যায়, কারণ ক্রেতারা জিএসটি সাশ্রয়ের সুবিধা নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন।দিল্লির মতো শহরে উৎসবের বিক্রি আনুমানিক ৭৫,০০০ কোটি টাকা হতে পারে, অন্যদিকে আমেদাবাদের সুতির কাপড়ের চাহিদা প্রায় ১০শতাংশ বেড়েছে, কারণ ২,৫০০ টাকার কম পোশাকের উপর জিএসটি হ্রাস করা হয়েছে।সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি শুধুমাত্র খরচ কমায়নি, সেগুলি উৎসবমুখর অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে, স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করেছে এবং ভারতে তৈরি পণ্যগুলিকে আবার বাজারে আধিপত্য বিস্তারের ক্ষমতা দিয়েছে।ভারতের অটোমোবাইল শিল্প এক দশকের মধ্যে নবরাত্রিতে তার সেরা পারফরম্যান্স দেখেছে।মারুতি সুজুকি গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বিক্রি করেছে, মাত্র আট দিনে ১.৬৫ লক্ষ গাড়ি সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে কেবল অষ্টমীতেই রেকর্ড ৩০,০০০ গাড়ি বিক্রি হয়েছে, যা ৩৫ বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ বিক্রি।এফএডিএ-এর মতে, নবরাত্রিতে গাড়ি শিল্পে বিক্রি বছরের হিসেবে ৩৪শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। উৎসবের আমেজ ইলেকট্রনিক্স বাজারেও গতি এনেছে। ২২ সেপ্টেম্বর জিএসটি কমানোর পর থেকে টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর এবং ওয়াশিং মেশিনের বিক্রি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।প্রিমিয়াম পণ্য বিভাগগুলির নেতৃত্বে সামগ্রিকভাবে ভোগ্যপণ্যের বিক্রয় ৪০-৪৫শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।হাইয়ার  ৮৫শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে, ২.৫ লক্ষের বেশি দামের ৮৫ ইঞ্চি এবং ১০০ ইঞ্চি টিভির দীপাবলি স্টক প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে।রিলায়েন্স রিটেইলে বিক্রি গত বছরের তুলনায় ২০-২৫শতাংশ বেশি, যার মধ্যে বেশি বিক্রি হয়েছে বড় স্ক্রিনের টিভি এবং স্মার্টফোন।বিজয় সেলস, এলজি এবং গোদরেজ অ্যাপ্লায়েন্সেস সকলেই শক্তিশালী দুই-অঙ্কের বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে।ওনাম থেকে নবরাত্রি পর্যন্ত, ভারতের সম্মিলিত উৎসবে বিক্রি এখন দেশের বার্ষিক খুচরো ভোগ্যপণ্যের বিক্রির ৪০-৪৫শতাংশ, এবং ধনতেরাস এবং দীপাবলি এগিয়ে আসার সাথে সাথে গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির ঐতিহাসিক উচ্চতার রেকর্ড -ভারতের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলি উৎসবের জিএসটি হ্রাসের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে, কারণ লক্ষ লক্ষ মানুষ গ্যাজেট থেকে শুরু করে সোনা পর্যন্ত সবকিছুর জন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেসের দিকে ঝুঁকছে।এই উৎসবের মরশুমে অ্যামাজন ইন্ডিয়ায় ২৭৬ কোটিরও বেশি গ্রাহক এসেছেন, যার ৭০শতাংশ গ্রাহক দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের শহরের,, যেখানে ক্রেতারা স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, শাড়ি, উৎসবের সাজসজ্জা, সৌন্দর্য পণ্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেছেন।ভারতে শেয়ার বাজারের উত্থান গ্রাহকদের উদ্দীপনার সাথে মিলে গেছে।  বাহান্ন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫,৭০৯ পয়েন্টে পৌঁছেছে নিফটি ৫০, যা তিনটি সেশনে ২.২শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পিছনে  সমর্থনে রয়েছে শক্তিশালী বিদেশী বিনিয়োগ, টাকার শক্তিশালী অবস্থান এবং উৎসবে চাহিদা। স্থানীয় মুদিখানা দোকান থেকে শুরু করে বিলাসবহুল গাড়ির শোরুম পর্যন্ত, ভারতের অর্থনীতির প্রতিটি অংশ নতুন আত্মবিশ্বাসে উজ্জ্বল।একটি নীতি উপহার, যা ভারতের বাজারকে প্রজ্জ্বলিত করেছে-প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার কেবল জিএসটি হার কমায়নি, সেইসঙ্গে গ্রাহকদের মনোবলও বাড়িয়েছে। জিএসটি-র হার কমানোর মাধ্যমে, সরকার প্রতিটি ভারতীয় পরিবারের আরও বেশি সঞ্চয়, আরও পছন্দ এবং ভারতীয় তৈরি পণ্যের প্রতি আরও গর্বের সাথে এই মরসুম উদযাপন নিশ্চিত এই উৎসবের মরশুমে, বার্তাটি স্পষ্ট: ভারতের অগ্রগতির কাহিনী দীপাবলির প্রদীপের চেয়েও উজ্জ্বলভাবে প্রজ্জ্বলিত। অটো সেক্টর থেকে ই-কমার্স, স্থানীয় কারিগর থেকে ডিজিটাল উদ্যোক্তা, দেশ কেবল উৎসবই উদযাপন করছে না, সেইসঙ্গে তার অর্থনীতির শক্তি এবং সময়োপযোগী সংস্কারের বুদ্ধিমত্তাও উদযাপন করছে।