নবম দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চার্জ গঠন পার্থর বিরুদ্ধে

IMG-20250830-WA0097

নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ছাব্বিশ জনের বিরুদ্ধে পরপর তিন মামলায় চার্জ গঠন। আদালত সূত্রে খবর, সোমবার আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে নবম দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চার্জ গঠন পার্থর বিরুদ্ধে। চার্জ গঠন বিধায়ক জীবন সাহার বিরুদ্ধেও। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একাধিক নিয়োগ মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত জেলেই দিন কাটছে তাঁর। এমনকী, নাম জড়িয়েছে তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও। কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা উদ্ধার হয়েছিল তাঁর বাড়ি থেকে।
এদিকে, জামিন চেয়ে একাধিকবার কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পার্থ। নিম্ন আদালত থেকে ইতিমধ্যেই তিনি জামিন পেয়ে গিয়েছেন। ইডি মামলাতেও জামিন মিলেছে তার। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের একক বেঞ্চ তাঁর জামিন মামলা আপাতত স্থগিত রেখেছে। মূলত, এই মামলায় জামিন পেলেই জেলমুক্তি হতে পারে পার্থর।
এদিকে সূত্রে খবর, সোমবার শুনানি চলাকালীন হাসপাতাল থেকেই পার্থ হাজিরা দেন। এদিনও বেডে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। চোখে কালো চশমা। শুনানি চলাকালীন তাঁর হাতে নথি ছিল। আইনজীবী যখন সওয়াল করছিলেন উনি নথিতে চোখ রাখছিলেন। সংশোধনাগার থেকে ভার্চুয়াল ছিলেন অশোক সাহা, জীবনকৃষ্ণ, এসপি সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসন্ন রায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য। পার্থর আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ‘হাইপোথেটিক্যাল সেম এলিগেশন। ওনাকে শুধু মাত্র মন্ত্রী হিসেবে এই কেসে যুক্ত করা হয়েছে। মামলা থেকে অব্যাহতি চাইছে। নতুন করে বলার কিছু নেই। আগেও বলেছি। এই মামলায় মোট চারটে চার্জশিট। প্রথম দিকের চার্জশিটে আমার নাম নেই। মন্ত্রী হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। এটা সিবিআইয়ের অভিযোগ মাত্র। কোনও নিউট্রাল উইটনেসের স্টেটমেন্ট নেই যে উনি লিগাল বা ইল্লিগাল অ্যাপয়েন্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। গ্রাউন্ডলেস চার্জেস। ডিসচার্জের প্রেয়ার করছি।’
এরপরই বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ‘আমি যেটুকু কেস ডায়েরি দেখেছি যে কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্টের ক্ষেত্রে ফাইল সিএম-এর কাছে পুট আপ হয়, এক্ষেত্রে সেটা হয়নি, সরাসরি এসএসসিও ডিপার্টমেন্টে গিয়েছে। এই মামলায় চার্জ গঠন করা হল। অভিযুক্তরা নিজেরা অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছেন। অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছেন। নম্বর বিকৃত করা হয়েছে। জীবন কৃষ্ণ সাহা, প্রসন্ন রায়-সহ একাধিক অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে বিচারক বলেন, ‘এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। চাকরিপ্রার্থীদের প্রভাবিত করে ঘুষ দিতে বাধ্য করেছেন। নিয়োগপত্র জাল করেছেন, ডিজিটাল নথি বিকৃত করেছেন। প্রমাণ লোপাট করেছেন।’ এরই প্রেক্ষিতে বিচারক পার্থর উদ্দ্যেশে বলেন, ‘অশোক সাহা, এসপি সিনহা, কল‍্যাণময়কে ওয়েস্ট বেঙ্গল এডুকেশনে নিয়োগ করার সময় নিয়ম না মেনে অবৈধ ভাবে কাজ করেছেন। আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে চার্জ রয়েছে।’ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিচারককে বলেন, ‘আমি আপনার উপর আস্থা রাখছি। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। রোজ রোজ এক কথা কী বলব।’ সঙ্গে এও জানতে চান চার্জ গঠনের সম্মতিপত্র কি বিচারকের কাছে জমা আছে কি না। বিচারকের হ্যাঁ শুনে পার্থ বলেন, ‘তাহলে আমার কিছু বলার নেই’।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement