নতুন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হল সোমবার থেকে৷ আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হয়ে যাচ্ছে চলতি বছর পুজোর আগেই৷ এ বছর থেকেই প্রথম বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছে সেমিস্টার ব্যবস্থায়৷ ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই সেমিস্টার। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ৬০ হাজার। প্রশ্নপত্র নিয়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। আগেই জানানো হয়েছিল, পরীক্ষার হলে কোনও রকম ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে না পরীক্ষার্থীরা। সকাল ১০ থেকে ১১. ১৫ পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। মিউজিক, ভিস্যুয়াল আর্টস এবং বৃত্তিমূলক বিষয়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষা হবে সকাল ১০ থেকে ১১. ৪৫ পর্যন্ত।
পরীক্ষার জন্য কড়া পদক্ষেপ করছে শিক্ষা সংসদ। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে কড়া উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য সাফ জানান, হেনস্থা বা মারধরের ঘটনা ঘটলে কোনও ভাবে তা ক্ষমা করা যাবে না। প্রতিটা পরীক্ষার্থীর স্ক্যানার দিয়ে চেক করা হয়। প্রতি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। এর পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, গোটা দেশে এই প্রথম বার দ্বাদশে সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হচ্ছে। এদিকে সিবিএসই বোর্ড বা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর বা বৈদ্যুতিন যন্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিয়ম উচ্চ মাধ্যমিকেও বহাল থাকছে। প্রশ্নপত্রও এমন ভাবেই করা হবে, যাতে ক্যালকুলেটর ব্যবহারের প্রয়োজন না পড়ে।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম সেমেস্টারে ছাত্রদের তুলনায় মোট ৭৯,৫৮২ জন বেশি ছাত্রী পরীক্ষায় বসছে। ২৩ টি জেলার ক্ষেত্রেই ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ৮১৮টি। উচ্চ মাধ্যমিকে বিশেষ ভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৪২। প্রসঙ্গত এই বছর থেকে প্রথমবারের মতো উচ্চমাধ্যমিক ওএমআর-এ হতে চলেছে। মূলত সব প্রশ্ন থাকবে এমএসকিউ।প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখেই এরকম প্রশ্নপত্র তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে থাকছে না কোন নেগেটিভ মার্কিং।
এদিকে এই পরীক্ষার দিন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যকে ঘিরে ধরে ক্ষোভে উগরে দিতে দেখা যায় অভিবাবকদের। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির কাছে তাঁরা জানতে চান, ‘সব ওদের উপরেই কেন?’ এরই পাশাপাশি একজন প্রশ্ন করেন, পরীক্ষার দু’মাস আগে বই পাওয়া গেল কেন তা নিয়েও। প্রথম থেকে বই নিয়ে খুব ভুগতে হয়েছে। কোথাও বই পাচ্ছিলাম না’ পাল্টা সভাপতি বললেন, ‘পড়ুয়াদের বই পেতে অসুবিধা হলে কাউন্সিলের অফিসে চলে আসবেন। এখানে একটা বইয়ের স্টল রয়েছে। আমরা ওটাকে বুক মার্ট বলি। ওখানে সব সময় বই পেয়ে যাবেন।’ এরপরেই পাশ থেকে আরও একজন অভিভাবক বলে ওঠেন, ‘২০২৫ সালের ব্যাচকেই সব ভুগতে হচ্ছে। ওএমআর শিটে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আবার মেশিনে মূল্যায়ন হবে। তার মধ্যে চারটে সিমেস্টার। বই পেলাম এত দেরিতে। সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা, বই পাচ্ছি জুলাই মাসে। আমাদের ছেলেমেয়েদের সব ভুগতে হচ্ছে।’ যার পাল্টা সংসদ সভাপতি বলেন, ‘ভোগান্তি কেন বলছেন? এটা তো ভাল, নম্বর অনেক বেশি পাবে।’
পরিবর্তন হলে সামগ্রিক কিছু সমস্যা বলেই মত সংসদ সভাপতির। তাঁর দাবি, ‘১২ বছর পর পাঠ্যক্রমে বদল আনা হল। সমস্যা তো একটু হবেই। তবে পরীক্ষার্থীদের সব তো ঠিকই দেখলাম। মার্কস শেষ কথা বলবে। আর বই নিয়ে একটু সমস্যা হলেও, আমরা তো স্টাডি মেটেরিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেই তুলে দিয়েছিলাম। যা আগে কখনও হয়নি। এবার প্রথম।’