মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুরে উন্নত এম্বোলাইজেশন

About_US

৩০ বছরের এক তরুণী মায়ের জীবন ও মাতৃত্ব রক্ষা

কলকাতা: মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুর, যা ভারতের অন্যতম বড় হাসপাতাল চেইন মণিপাল হসপিটালস গ্রুপ-এর অংশ, সেখানে ৩০ বছর বয়সী এক মহিলার জীবন রক্ষা করা হয়েছে এক জটিল এন্ডোভাসকুলার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। গর্ভপাতজনিত প্রাণঘাতী রক্তক্ষরণের পর, ডা. পার্থ প্রতিম সামুই, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ইন-চার্জ, ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি, মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুরে এই চিকিৎসার নেতৃত্ব দেন।
রোগিণী কলকাতার বাসিন্দা, ৫ বছরের এক সন্তানের মা। দ্বিতীয়বার গর্ভবতী অবস্থায়, ২২ সপ্তাহে তাঁর গর্ভপাত হয় এবং তিনি গুরুতর রক্তক্ষরণে জরুরি বিভাগে ভর্তি হন। ভ্রূণ নষ্ট হলেও প্ল্যাসেন্টা গভীরভাবে জরায়ুর ভেতরে আটকে ছিল। এটি একটি বিরল সমস্যা, প্লাসেন্টা ইনক্রেটা, যেখানে প্ল্যাসেন্টা জরায়ুর ভেতরে ঢুকে যায় এবং সহজে সরানো যায় না।
প্রথমবার প্ল্যাসেন্টা বের করতে গেলে প্রবল রক্তক্ষরণ হয়। তখন তাঁকে সাময়িকভাবে বাঁচানো হয় বেলুন ট্যাম্পোনেড পদ্ধতিতে। পরে জরুরি এমআরআই করে সমস্যাটি নিশ্চিত হয়।
চিকিৎসক দল সিদ্ধান্ত নেয় বাইল্যাটেরাল ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন করার। এতে সরু ক্যাথেটার দিয়ে জরায়ুর ধমনীগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় এবং জরায়ুও অক্ষত থাকে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো বড় অস্ত্রোপচার বা জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া প্রয়োজন হয়নি।
ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিস্ট, গাইনোকোলজিস্ট ও অ্যানাস্থেশিওলজিস্টদের দল একসঙ্গে কাজ করে সফলভাবে এই অপারেশন সম্পন্ন করেন। রোগিণী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, মাত্র ২ দিনের মধ্যে আইসিইউ থেকে বের হন এবং ৫ দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান।
ডা. পার্থ প্রতিম সামুই বলেন, “এই তরুণী মা গর্ভপাতের পর বিপজ্জনক রক্তক্ষরণে ভুগছিলেন। প্ল্যাসেন্টা এত গভীরে ছিল যে অস্ত্রোপচার করলে প্রাণঘাতী রক্তক্ষরণ হতো এবং অনেক সময় মহিলাদের জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু এম্বোলাইজেশন প্রক্রিয়ায় আমরা রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পেরেছি, জরায়ুও অক্ষত রাখা গেছে। এতে তাঁর জীবন যেমন বাঁচল, ভবিষ্যতেও তিনি সন্তান ধারণের সুযোগ পাবেন। একজন চিকিৎসক হিসেবে এর চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে না।”


এই চিকিৎসা কেবল রোগিণীর জীবনই রক্ষা করেনি, তাঁর জরায়ুও সংরক্ষণ করেছে। মণিপাল হাসপাতাল মুকুন্দপুরে এই প্রথম এ ধরনের কেস সফলভাবে সম্পন্ন হলো, যা উন্নত মাতৃসেবায় এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement