সপ্তর্ষি সিংহ
একদিকে মেট্রোর নির্মাণ কাজ, তার উপর লাগাতার বৃষ্টি। বাইপাস জুড়ে যাতায়াত করা নিত্য যাত্রীদের জন্য বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সল্টলেকের নিক্কো পার্ক থেকে চিংড়িঘাটা মোড়, বেলেঘাটা বাইপাস থেকে রুবি মোড় পর্যন্ত তীব্র যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন। বৃষ্টির জেরে রাস্তার হাল খারাপ হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নিত্য যাত্রীদের। চিংড়িঘাটা থেকে রুবি মোড় পৌঁছতে কার্যত কালঘাম ছুটেছে যাত্রী থেকে গাড়িচালকদের। আম্বেদকর ব্রিজে ওঠার মুখে পিসি চন্দ্র গার্ডেনের সামনে রাস্তার হাল খারাপ বলে যাত্রীদের অভিযোগ। বাইপাসের এই বৃহৎ অংশে জল জমে রাস্তায় একাধিক বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহনের গতি শ্লথ হয়েছে। একই অবস্থা মেট্রোপলিটনের কাছে। কলকাতা পুরসভার কর্মীরা রাস্তা মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন। কিন্তু তাতেও খুব যে সুরাহা হয়েছে, তা নয়। সেক্টর ফাইভ থেকে রুবি আসতে কমপক্ষে ঘণ্টাখানেক সময় লাগছে বলে চালকদের অভিযোগ।
শুক্রবার দেখা গেছে, মাত্র এক কিলোমিটারেরও কম রাস্তা পার করতে গাড়িগুলির লেগেছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। সুকান্তনগর সংলগ্ন অংশে এই দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে বহু গাড়িকে। একই ভাবে যানজটের প্রভাব অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার উপরও পড়ছে। এক বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, তারা এখন নিউটাউন থেকে রোগী নিয়ে বাইপাসের ধারে যাওয়ার জন্য বিকল্প রুট হিসেবে খালপাড়ের রাস্তা ব্যবহার করছে। এই বিষয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, বাইপাসের রাস্তা সংস্কারের কাজ জোরকদমে চলছে এবং আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি এই কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তবে বাইপাসে নিত্য যানজটের জেরে সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি সবচেয়ে সমস্যায় পড়ছেন বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা। বিমান ধরতে হলে বাড়তি সময় হাতে নিয়ে পথে না নামলে ফ্লাইট ‘মিস’ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। তবে শুক্রবার যানজট মোকাবিলায় দক্ষিণমুখী যানবাহনের জন্য আলাদা চ্যানেল তৈরি করে পরিস্থিতির মোকাবিলার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে ট্রাফিক পুলিসকে। সূত্রের খবর, যানজট সমস্যা মেটাতে নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ এবং বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, এই সংক্রান্ত বিষয়ে কেএমডিএ, কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। চিংড়িঘাটা মোড় এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের কাজও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন দেখার এই সমস্যার সমাধান কবে হয়।