যুদ্ধ থামাতে পুতিন ও জ়েলেনস্কির মুখোমুখি বৈঠক চান ট্রাম্প 

IMG-20250817-WA0087

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই লক্ষ্যে শুক্রবার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল আলাস্কায়। আমেরিকা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে বৈঠক। কিন্তু বৈঠকের শেষে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি বা শান্তিচুক্তি নিয়ে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থামাতে এ বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক চাইছেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে চাইছেন তিনি নিজেও। ত্রিপাক্ষিক এই বৈঠক কবে হবে, তা-ও প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে রেখেছেন তিনি। শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরেই জ়েলেনস্কিকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। ফোন করেছিলেন ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স— এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকেও। তখনই নাকি ট্রাম্প তাঁদের জানান, তিনি আগামী ২২ আগস্ট পুতিন এবং জ়েলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করতে চাইছেন। অবশ্য এই বৈঠক কোথায়, কখন হতে পারে, তা  জানা যায়নি।  নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে  বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছইনি, তবে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।’ অন্যদিকে পুতিন তিনি জানান, তাঁরা কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা ভবিষ্যতে ইউক্রেনে শান্তির পথ খুলে দিতে পারে। তবে যুদ্ধ থামা নিয়ে কোনও পক্ষ সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য দেয়নি। ট্রাম্পকে শান্তির জন্য নোবেল দেওয়ার দাবি উঠেছে নানা জায়গা থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারেন, বহু আগে থেকেই বার বার এমন দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। আলাস্কার বৈঠকে সত্যিই যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে, শান্তির জন্য নোবেল পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারতেন ট্রাম্প। কিন্তু আলাস্কার বৈঠক থেকে তেমন কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। তবে হাল ছেড়ে দিতে নারাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাই যুদ্ধ থামাতে এবার পুতিনের সঙ্গে জেলেনস্কিকে মুখোমুখি বসিয়ে আলোচনা করতে চাইছেন ট্রাম্প। ভোটপ্রচারে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন। বেশ কয়েকটি যুদ্ধ এবং সংঘাত থামিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করলেও সাড়ে তিন বছর ধরে চলা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও থামাতে পারেননি নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রত্যাশী ট্রাম্প। জো বাইডেন আমলের মতো কঠোর মস্কো-বিরোধী অবস্থান থেকে নরমে-গরমে মস্কোর মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন তিনি। রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন ভারতের উপর। আবার আলাস্কায় পুতিনকে লাল গালিচা পেতে স্বাগতও জানিয়েছেন। সেই বৈঠককে ট্রাম্প এবং পুতিন ফলপ্রসূ বলে দাবি করলেও, যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে কোনও রফাসূত্র মেলেনি সেখানে। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকে ট্রাম্প বার বার দাবি করছেন যে, সংঘর্ষবিরতি চুক্তির মাধ্যমে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত থামানো সম্ভব নয়। তাই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তি প্রয়োজন বলে জানান তিনি। ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর প্রতিবেদনে ইউরোপের দুই আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইউরোপের নেতাদের ফোনে জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন জ়েলেনস্কি ডনবাস অঞ্চল রাশিয়াকে ছেড়ে দিলে দু’পক্ষের মধ্যে শান্তিচুক্তি হবে। তবে ট্রাম্পের এই প্রস্তাব জ়েলেনস্কি না-মানলে যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতি হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement