অভিবাসীদের ধরপাকড়ে রণক্ষেত্র লস অ্যাঞ্জেলেস

IMG-20250608-WA0285

অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল লস এঞ্জেলেস। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হতেই বিক্ষোভ শুরু হবে যায়। সেই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পাল্টা ন্যাশনাল গার্ড নামিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। চলে ব্যাপক ধরপাকড়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহলদারি চালায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। জানা গিয়েছে, প্যারামাউন্ট এলাকায় ফেডারেল এজেন্টদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দাঙ্গারোধী পোশাক ও গ্যাস মাস্ক পরিহিত নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এবার ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার নিরাপত্তা কর্মীকে মোতায়েন করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে দু’হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নরের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন। সেখানকার প্রশাসনের উপর আস্থা রাখতে না-পেরে সেনা মোতায়েনের নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট। মূলত তাঁর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধেই লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। শুক্রবার থেকে চলছে বিক্ষোভ। শনিবার রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল গোটা শহর। লস অ্যাঞ্জেলেসের এই পরিস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনকে চিন্তায় রেখেছে।আমেরিকায় অবৈধ ভাবে বসবাসকারী ভিন্‌ দেশের নাগরিকদের চিহ্নিত করতে পদক্ষেপ শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত কয়েক দিনে লস অ্যাঞ্জেলেস-সহ ক্যালিফর্নিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে মার্কিন অভিবাসন এবং শুল্ক দফতরের আধিকারিকেরা হানা দিয়েছেন। ধরপাকড় চলেছে । শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত ১১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন মানুষ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ট্রাম্প প্রশাসন অত্যধিক বলপ্রয়োগ করছে। এর ফলে অভিবাসীরা সন্ত্রস্ত।হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্দেশিকায় সই করেছেন। ২০০০ ন্যাশনাল গার্ডস্‌ম্যান মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। ক্যালিফর্নিয়ার প্রশাসন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ। গভর্নর গেভিন নিউসম সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ক্যালিফর্নিয়ার ন্যাশনাল গার্ডদের সরিয়ে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডেরাল সরকার। এই সিদ্ধান্ত ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে উস্কানিমূলক’। এর ফলে উত্তেজনা আরও বাড়বে। লস অ্যাঞ্জেলেস প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সম্পূর্ণ সক্ষম। এটা ভুল পদক্ষেপ।’’ ট্রাম্প অবশ্য কড়া অবস্থান নিয়েছেন। ক্যালিফর্নিয়া প্রশাসনের সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, ‘‘যদি ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর, লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র নিজেদের কাজ করতে না-পারেন, ফেডেরাল সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।’’ প্রতিবাদকারীদের ‘দাঙ্গাবাজ এবং ডাকাত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। গত নভেম্বরে নির্বাচনের প্রচারেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবেন। আমেরিকায় অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করা হবে না। ক্ষমতায় আসার পর এই সংক্রান্ত ট্রাম্পের একাধিক পদক্ষেপে বিতর্ক হয়েছে। এ বার লস অ্যাঞ্জেলেসে অবৈধবাসীদের ধরপাকড়ও শুরু করল ট্রাম্প প্রশাসন। লস অ্যাঞ্জেলেসে যে হেতু সব থেকে বেশি সংখ্যক অভিবাসীরা থাকেন, ফলে অশান্তির আগুনে এই মুহূর্তে জ্বলছে শহর। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরাও ভাঙচুর শুরু করে। একাধিক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বিভিন্ন দোকানে চলে অবাধ লুঠপাট।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement