দাঙ্গা লাগাতেই জঙ্গি হামলা, পাকিস্তানকে তোপ মোদীর

IMG-20250606-WA0270

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে এবার জম্মু ও কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়েই পাকিস্তানকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর শুক্রবার উপত্যকায় প্রথম পা রাখেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। আর সেখান থেকেই সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। মোদী বলেন, ‘‘পর্যটন থেকে রোজগার বাড়ে। পর্যটন মানুষকে জোড়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের পড়শি দেশ মানবতাবিরোধী এবং পর্যটনবিরোধী। পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল যা হয়েছে এটা তার উদাহরণ। পাকিস্তান পহেলগাঁওয়ে মানবতার উপর আঘাত করেছে।’’
তিনি বলেন, ‘২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে যা হয়েছে, তা পাকিস্তানের মানবতা বিরোধী হওয়ার উদাহরণ। হামলার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে দাঙ্গা বাধানো, কাশ্মীরের মানুষের রোজগার বন্ধ করে দেওয়া। এই জন্যই পাকিস্তান পর্যটকদের উপরে হামলা করেছিল। গত কয়েক বছরে কাশ্মীরে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসছিল। এই পর্যটন শিল্পের জন্য কাশ্মীরে গরিব মানুষের পেট চলে। এই হামলা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষের সেই রোজগার বন্ধ করে দিতে।’ মোদীর অভিযোগ, ভারতে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। মোদীর কথায়, ‘‘পাকিস্তান কাশ্মীরের পর্যটনের উপর হামলা করেছে। এই পর্যটন থেকে জম্মু-কাশ্মীরের গরিবদের সংসার চলে, সেই পর্যটনকে নিশানা করেছে পাকিস্তান।’’ পাশাপাশি, অপারেশন সিন্দুরেরও প্রশংসা শোনা যায় মোদীর কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে এক মাস আগে কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তানের আতঙ্কবাদীরা। এ বার থেকে পাকিস্তান যতবার অপারেশন সিন্দুরের নাম শুনবে, তখনই নিজেদের সর্বনাশ, হারের কথা মনে পড়বে। পাকিস্তান কখনও ভাবতেও পারেনি ভারত তাদের মদত দেওয়া আতঙ্কবাদীদের উপর এ ভাবে হামলা করবে।’ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় স্থানীয় আদিল হুসেনের। কাশ্মীরের জনসভা থেকে সেই আদিলের কথাও উঠে আসে মোদীর ভাষণে। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ ঘোড়া চালান, কেউ আবার গাইড— সকলকে শেষ করার ষড়যন্ত্র ছিল পাকিস্তানের। সন্ত্রাসবাদীদের সামনে রুখে দাঁড়ানো আদিলও তো ওখানে রোজগারের আশায় গিয়েছিল। পরিবারের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য কাজ করত। সেই আদিলকেও মেরে দিয়েছে।’’ মোদী বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের যুবসমাজ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি। বছরের পর বছর সন্ত্রাসবাদের কারণে জম্মু-কাশ্মীরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। ওই সন্ত্রাসবাদের কারণে এখানকার মানুষ স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদকেই নিজেদের ভাগ্য বলে মেনে নিতে শুরু করেছিল। তবে আমরা সেটা পাল্টে দিতে পেরেছি। এখন জম্মু-কাশ্মীরের যুবসমাজ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। শুধু তা-ই নয় তা পূরণও করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এখানকার যুবসমাজের স্বপ্নপূরণে যদি কোনও বাধা আসে, তবে সেই বাধার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করবে মোদী।’’ পাকিস্তানি হামলায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের আর্থিক সাহায্যেরও ঘোষণা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করেছে, যাঁদের বেশি ক্ষতি হয়েছে, তাদের দু’লাখ টাকা দেওয়া হবে। আর যাঁদের ক্ষতির পরিমাণ কম, তাঁদের এক লাখ টাকা করে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন কাশ্মীরবাসীর উদ্দেশ্যে জোড়া বার্তা দিয়ে গেলেন। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, পাকিস্তান যতই মুখে সাধারণ কাশ্মীরবাসীর প্রতি সহানুভূতির কথা বলুক, আসলে ওরা সাধারণ খেটে খাওয়া কাশ্মীরবাসীর কথা ভাবে না। পাকিস্তান মানবতা বিরোধী, মানুষের মেলবন্ধনের বিরোধী, গরিবের রুজিরুটির বিরোধী। পহেলগাঁওয়ে যেটা হল সেটা এরই উদাহরণ। দুই, পাকিস্তানের আসিম মুনির বা বিলাওয়াল ভুট্টোরা যতই জাতের নামে ভারতবাসীর মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করুক, কাশ্মীর তথা ভারতবাসীর মধ্যে বিভেদ তৈরি আর সম্ভব নয়।কাশ্মীর এখন শুধুই উন্নয়নের পথে হাঁটবে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement