অপারেশন সিন্দুর তো ট্রেলার, হুঙ্কার রাজনাথের

IMG-20250517-WA0005

পিকচার আভি বাকি হ্যায়।অপারেশন সিন্দুরের প্রশংসা করে পাকিস্তানকে এটাই বোঝালেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর হুঙ্কার, ‘‘অপারেশন সিন্দুর এখনও শেষ হয়নি, যা ঘটেছে তা কেবল ট্রেলর ছিল। বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে পৌঁছে পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজনাথ সিং। শুক্রবার গুজরাটের ভুজ এয়ারফোর্স স্টেশনে যান তিনি। সেখানে বায়ুসেনাদেরদের উদ্দেশ্যে রাজনাথ সিং বলেন, ‘অপারেশন সিন্দুরের সময় আপনারা যা করেছেন, তা সকল ভারতীয়কে গর্বিত করেছে।’ পহেলগাঁও হামলার জবাব দিতে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। অপারেশন সিন্দুরের মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই অপারেশন এখনও শেষ হয়নি বলেই জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রাজনাথ বলেন, “ভারত কী কী করতে পারে, অপারেশন সিন্দুর শুধু তার ট্রেলার। এই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়নি। সঠিক সময় এলে আমরা বিশ্বকে গোটা সিনেমা দেখাবো। পাকিস্তান যদি ফের উস্কানিমূলক কোনও কাজ করে তাহলে কঠোরতম শাস্তি পাবে। আমরা কিছু সময়ের জন্য পাকিস্তানকে নজরে রাখছি। যদি ওরা নিজেদের স্বভাব বদলায় তাহলে ভালো। না হলে ভয়ংকর ফল ভুগতে হবে।” শুক্রবার গুজরাটের ভুজ এয়ারফোর্স স্টেশন থেকে রাজনাথ সিং বলেন, ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করেনি পাকিস্তান। এমনকী, প্রতিশ্রুতিও ভঙ্গ করেছে। কিন্তু ভারতকে শেষ করার ইচ্ছা তাদের যে আজীবন স্বপ্নই থেকে যাবে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। পাকিস্তানকে সবক শেখাতে ভারতীয় বায়ুসেনার মাত্র ২৩ মিনিটই যথেষ্ট ছিল। এই সময়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার বা আইএমএফের দিকেই তাকিয়েছিল পাকিস্তান। এমন আবহে ইসলামাবাদকে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার-এর বাড়তি ঋণ মঞ্জুর করেছে আ্ইএমএফ। সেই নিয়ে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে রাজনাথ সিং বলেন, ‘পাকিস্তানকে দেওয়া অর্থ সাহায্য সন্ত্রাসের পেছনেই খরচ হবে। এই বিষয় আ্ইএমএফের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’ রাজনাথের অভিযোগ, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে আর্থিক সহয়তা করছে। সেই কারণে আইএমএফ-কে ঋণ দেওয়ার বিষয়টা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। তাঁর দাবি, ‘‘পাক সরকার মুরিদকে এবং বহাওয়ালপুরের দুই জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই তৈবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি পুনর্নিমাণের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। আইএমএফ থেকে পাওয়া অর্থের একটা বড় অংশ অবশ্যই ওই ঘাঁটি পুনর্নিমাণের জন্য ব্যবহার করা হবে।’’ গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নৃশংস হামলা চালিয়েছিল লস্কর জঙ্গিরা। ধর্মীয় পরিচয় জেনে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল ২৫ পর্যটককে। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ যায় এক কাশ্মীরি যুবকের। সেই হামলার ১৫ দিনের মাথায় সন্ত্রাসবাদীদের মোক্ষম জবাব দেয় ভারতীয় সেনা। ৬-৭ মে’র রাতে জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। পালটা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। তাদের ড্রোন হামলা প্রতিহত করে ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভারতের মারে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আক্রমণ থামানোর আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ইসলামাবাদের মিনতিতে সাড়া দেয় দিল্লি। ১০ মে সম্মতি জানানো হয় সংঘর্ষবিরতির। ১২ মে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, “পাকিস্তান ভারতের ক্ষমতা টের পাওয়ার হামলা থামানোর আর্জি জানিয়েছিল। ওরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নিজেদের এহেন কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার। তারপরই আমরা সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছি। তবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। আমরা আপাতত এই অভিযান স্থগিত রেখেছি।” গুজরাটের ভুজ এয়ারফোর্স স্টেশন থেকে সেই কথাই আরও একবার স্মরণ করালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement