যাদবপুরে কড়া হাই কোর্ট, প্রশ্নে গোয়েন্দা ব্যর্থতা

IMG-20250305-WA0333(1)

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য।অশান্তির জল গড়িয়েছে আদালতেও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির ঘটনায় গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা দেখছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গোয়েন্দাদের এমন ভূমিকায় ভবিষ্যতে আরও খারাপ ঘটনা ঘটতে পারে। বুধবার যাদবপুর সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এত জমায়েত হল? গোয়েন্দারা ব্যর্থ হলে আগামী দিনে প্রতিবেশী দেশের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। সেটা তো হতে দেওয়া যায় না। ওই ভিড় সম্পর্কে পুলিশের গোয়েন্দারা যদি জানতে না পারে, আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ভবিষ্যতে।’’ একই সঙ্গে আদালত জানায়, আহত ছাত্র ইন্দ্রানুজের ই-মেলে অভিযোগকেও মান্যতা দিতে হবে এবং এই অভিযোগ নিয়ে এফআইআর করতে হবে। সেদিনের যাবতীয় ঘটনার বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরিরও নির্দেশ দেন বিচারপতি।যাদবপুরের বামপন্থী ছাত্রদের তরফে কয়েক জন এ দিন আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলাকারীদের বক্তব্য, শনিবারের ঘটনায় ৭টা এফআইআর হয়েছে। তার মধ্যে ২টি পুলিশ নিজে করেছে, ৫টি বাইরের লোক দিয়ে করানো হয়েছে। তাঁদের কোনও বক্তব্য নেওয়া হয়নি। মামলাকারীদের আরও বক্তব্য, অভিযোগগুলি পরস্পর বিরোধী।এ দিন বিচারপতি জানতে চান, কী করে এই ভিড় মন্ত্রীর এত কাছে চলে এল? বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, ‘এমন ঘটনা দু’টো কারণে ঘটতে পারে। মন্ত্রী যদি ওই ছাত্রদের কাছাকাছি আসার সুযোগ দেন, সেটা অন্য ব্যাপার। তবে যদি গোয়েন্দারা ব্যর্থ হয়, তাহলে তো আগামী দিনে প্রতিবেশী দেশের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। সেটা হতে দেওয়া যাবে না। ঘটনাকে রাজ্যের অন্য অংশের জন্য উদাহরণ হতে দিতে পারি না। ক্রাউড ম্যানেজমেন্টে একটা বড় ব্যর্থতা। এটা রাজ্যের জন্য ব্যর্থতা। কেনো এই গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা, সেটা জানা দরকার। এটা নিয়ে আরও সতর্ক না হলে, গোটা রাজ্যে তার প্রভাব পড়বে। এটা চলতে দেওয়া যাবে না।’ ১২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৪ টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি। গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জখমও হন তিনি। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় দুই পড়ুয়াও জখম হন। তাঁদের এক জন চোখে আঘাত পান। অন্য জন চোট পান পায়ে। শনিবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পর রাতেও অশান্তি ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনার পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বাম ছাত্র সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহণ করছে না। যাদবপুরের ঘটনায় সব মিলিয়ে সাতটি এফআইআর রুজু হলেও পুলিশ বাম ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ নিচ্ছে না।
তার প্রেক্ষিতেই বুধবার হাই কোর্টে রাজ্য জানান, সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক এফআইআর দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। পাল্টা আদালত জানিয়েছে, মামলাকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করতে হবে পুলিশকে। সেই মামলাতেই যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ, আগামী ১২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement