ভোটার তালিকায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিয়ে চরম হুঁশিয়ারি মমতার
কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বুথ এজেন্টদের সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় বারবার মাইক বিভ্রাটে মেজাজ হারালেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে ‘অন্তর্ঘাত’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও নজিরবিহীন আক্রমণ শানালেন তিনি। সরাসরি নাম না করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি তাঁর তোপ, “দাঙ্গাকারীরা দেশ চালাচ্ছে। জাতির জনকের নাম বাদ দিয়ে দেশটাকে ‘রাম নাম সত্য’-র দিকে নিয়ে যাচ্ছেন আপনারা।”
মাইক বিভ্রাট ও অন্তর্ঘাতের অভিযোগ:
এদিন বক্তৃতার মাঝেই বারবার মাইক বিকল হওয়ায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি বার বার দেখছি আপনারা প্রবলেম তৈরি করছেন। শিল্প বৈঠকেও এই একই সমস্যা দেখেছি। এটা অন্তর্ঘাত হচ্ছে না তো? কেন পুলিশ বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সাউন্ড চেক করেন না?” তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন যে, এই গাফিলতির জন্য এবার তিনি কড়া পদক্ষেপ করবেন।
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ও ভাষা বিতর্ক:
ভোটার তালিকার শুনানির জন্য প্রতিটি বিধানসভায় ১৫ জন করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীকে ‘স্বাধীন পর্যবেক্ষক’ হিসেবে নিয়োগ করার কমিশনের সিদ্ধান্তকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, “রাজ্যকে না জানিয়ে দিল্লির লোকেদের পর্যবেক্ষক করা হচ্ছে। যারা রাজবংশী, কামতাপুরী, লেপচা বা নেপালি ভাষা বোঝে না, তারা নাকি শুনানি করবে! গুজরাট-রাজস্থানের লোক এসে বাংলার ভাগ্য নির্ধারণ করবে?” তিনি জানান, এই বহিরাগত পর্যবেক্ষকদের গতিবিধি এবং তাঁদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবে রাজ্য।
কমিশন ও বিজেপির যোগসূত্র: নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলনেত্রী দাবি করেন, “শুনেছি কমিশনের অফিসে বিজেপি একটা এজেন্ট বসিয়ে দিয়েছে, যে অনলাইনে ইচ্ছেমতো নাম বাতিল করছে। এমন নির্লজ্জ কমিশন জীবনে দেখিনি।” তাঁর অভিযোগ, ২০০২ সালের সিপিএম আমলের ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করে বর্তমানে সাধারণ মানুষকে হয়রান করা হচ্ছে।
অবাঙালিদের অভয় ও সম্পত্তি রক্ষা: উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের বাসিন্দাদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মমতা বলেন, “আপনাদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। বিহারে ভোট না দিয়ে যদি এখানে থাকেন, তবে নির্ভয়ে বাংলার তালিকায় নাম তুলুন।” তাঁর সাফ কথা, বাংলা না থাকলে দেশ থাকবে না, আর চক্রান্ত করে বাংলাকে দখল করাও সম্ভব নয়।










