সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশেষে রাজ্যের ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ে পেল স্থায়ী উপাচার্য। এই তালিকায় রয়েছে কলকাতা, যাদবপুর, উত্তরবঙ্গের মতো নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে এতদিন অস্থায়ী উপাচার্য বসিয়ে কাজ সামলানো হচ্ছিল। সোমবার, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এমনই আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের পথে সমাধান হল। আর এই সিদ্ধান্তে আপাতত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে শান্তা দত্তকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সোমবার রাজ্যের মোট ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে স্থায়ী উপাচার্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য পদে বসানো হচ্ছে আশুতোষ ঘোষকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদে বসছেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য হলেন ওম প্রকাশ মিশ্র। এছাড়াও, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আশিষ ভট্টাচার্য, কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ণব সেন, সাধু রামচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ে চন্দ্রদীপা ঘোষ ও বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু তালেবকে স্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হচ্ছে বলেই খবর। বর্তমানে রাজ্যে মোট ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ১৯টিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হলেও সমস্যা তৈরি হয়েছিল ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে। শেষ শুনানিতে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জট কেটেছে। বাকি ছিল ১৫টি। যার মধ্যে সোমবার ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জট কাটল বললেই চলে। বাকি পড়ে থাকল ৭টি। যেগুলির ‘ভাগ্য’ নির্ধারণ আগামী শুনানিতে হবে বলেই খবর। সম্প্রতি, কলকাতা, যাদবপুর-সহ এই ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ভার সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত সার্চ কমিটিকে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্তের বেঞ্চ। সেই কমিটির নেতৃত্বেই প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ হয়েছিল বলেও খবর। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সর্বদাই বিতর্কে থাকতে দেখা গেছে ওমপ্রকাশকে। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই ওম প্রকাশ মিশ্র এবার বসলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্যের পদে। পাশাপাশি অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য পদে থাকাকালীন বিতর্কের মুখে থেকেছেন শান্তা দত্ত। কখনও ব্রাত্য বসু বনাম শান্তা, কখনও বা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা বনাম শান্তা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকে ঘিরে শান্তা দত্তকে যে অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছিল তাতে বঙ্গ রাজনীতিতে বেশ আলোড়ন পড়ে। পাশাপাশি নড়েচড়ে বসে বঙ্গের শিক্ষামহলও।কারণ, এই শান্তা দত্তকেই দেখা গিয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করতে। আর তারপর থেকেই রাজ্য বনাম শান্তা বা তৃণমূল বনাম শান্তা বিতর্ক দানা বেঁধেছে। উপাচার্যকে শান্তাকে একাধিক বিশেষণে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এমনকি, শান্তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল ছাত্রনেতা অভিরূপ চক্রবর্তী। অবশ্য পরে তাকে সেন্সর করেন শান্তা।