পশ্চিমবঙ্গে কেবল দুর্গাপূজায় সরকার অনুদান দিয়ে থাকে?

IMG-20250928-WA0122

হাসান লস্কর

এটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়। ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজা কমিটির জন্য সরকারি অনুদান একটি বহুল আলোচিত বিষয়। সিপিআইএম কুলতলী এরিয়া কমিটির সম্পাদক উদয় মন্ডলের কথায়। এই বক্তব্যটি খুবই স্বাভাবিক যে, যদি সরকার একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানে অর্থ সাহায্য করে, তবে অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলির জন্যও একই ধরনের সহযোগিতা করা উচিত। এই বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির সঙ্গে এবং সকল নাগরিকের সমানাধিকারের সঙ্গে জড়িত।দুর্গাপূজা এবং অন্যান্য উৎসবের ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজা একটি বিরাট সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সরকার অনেক সময় এই উৎসবের আয়োজকদের পূজা কমিটি আর্থিক সহায়তা করে থাকে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এর সপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে, এই অনুদান শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার পালনের জন্য নয়, বরং জননিরাপত্তা, পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচার এবং রাজ্যের সংস্কৃতি ও পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ইউনেস্কো  কলকাতার দুর্গাপূজাকে মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা এর সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়েছে।বিভিন্ন সময়ে, সরকার অন্যান্য ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক উৎসবের জন্যও অনুদান বা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন, কিছু রাজ্যে কুম্ভ মেলা বা অন্যান্য বড় হিন্দু উৎসবের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়। একইভাবে, অতীতে হজ যাত্রা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উৎসবের জন্যও সরকারি সহযোগিতা বা সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যদিও এর কিছু অংশ পরে আদালতের আদেশে বাতিল হয়েছে। অনেক রাজ্য সরকার সাংস্কৃতিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, এবং শিল্পকলা সংক্রান্ত আয়োজনে আর্থিক সহায়তা করে থাকে। অন্যান্য ধর্মাবলিদের অনুষ্ঠানেও সরকার সহযোগিতা করুক, তা সুষম ও ন্যায্য সহায়তার নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি। সরকারের উচিতস্বচ্ছতা ও সমতা  একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য যদি সরকারি অর্থ ব্যয় করা হয়, তাহলে অন্যান্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবের ক্ষেত্রেও সমতার নীতি বজায় রাখা উচিত, যাতে তা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতির পরিপন্থী না হয়। সরকারের উচিত এমনভাবে অনুদান দেওয়া যাতে তা শুধুমাত্র ধর্মীয় উপাসনার জন্য না হয়ে সাংস্কৃতিক প্রচার, জনশৃঙ্খলা রক্ষা, স্বাস্থ্য বা সামাজিক সচেতনতা ইত্যাদি বৃহত্তর সামাজিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের সরকারি অনুদান প্রায়শই আদালতের নজরে আসে। ভারতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ  কোনও বিশেষ ধর্ম বা ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রচার বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও নাগরিককে কর দিতে বাধ্য করা যাবে না। তাই সরকারের অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে এর আইনি বৈধতা ও উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ।সংক্ষেপে বলা যায় এই দাবিটি বহু মানুষের মনেই আছে এবং এটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের একটি মৌলিক প্রশ্ন। এই বিষয়ে বিতর্ক ও আলোচনা চলতেই থাকে। বিশেষ কোনো উৎসব বা এলাকার সকল ধর্মীয় মানুষের সরকার সহযোগিতা করুক।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement