পাটনা: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিহার সফর করেন এবং প্রায় ৩৬,০০০ কোটি টাকার বিস্তৃত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, যা রাজ্যের পরিকাঠামো এবং সংযোগ ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করবে। এই সফরের মূল লক্ষ্য থাকবে রেল প্রকল্পগুলি, যা বিহারের পরিবহন নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে। প্রধানমন্ত্রী আরারিয়া-গলগলিয়া (ঠাকুরগঞ্জ) নতুন রেলপথের উদ্বোধন করবেন, যা আরারিয়া এবং কিষাণগঞ্জ জেলার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করবে। এই প্রকল্পটি ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে দ্বারা সম্পাদিত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যার ব্যয় ৪,৪১০ কোটি টাকারও বেশি। প্রায় ১১১ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এবং বেশ কয়েকটি বড় ও ছোট সেতু এবং ১৫টি স্টেশন নিয়ে গঠিত এই প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর সীমান্ত অঞ্চলে যাত্রী ও মালবাহী পরিবহনের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করবে। এটি নেপালের সাথে বর্ধিত আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের সুযোগও উন্মুক্ত করবে, যার ফলে বিহারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।প্রধানমন্ত্রী ২,১৭০ কোটি টাকারও অধিক মূল্যের বিক্রমশিলা-কাটারিয়া রেল লাইন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন, যা গঙ্গা নদীর উপর দিয়ে একটি নতুন রেল সংযোগ স্থাপন করবে। এই প্রকল্পগুলির পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী চারটি নতুন ট্রেন পরিষেবার ফ্ল্যাগ অফ করবেন যা সংযোগ এবং সুবিধার নতুন পথ উন্মোচন করবে। এই ট্রেনগুলির নিয়মিত পরিষেবার মধ্যে ১৫৭০১ (কাটিহার – শিলিগুড়ি) এক্সপ্রেস, যা আরারিয়া-গলগলিয়া নতুন লাইন হয়ে যাবে। এটি ১৭-০৯-২০২৫ তারিখ থেকে প্রতিদিন ০৫:০০ ঘন্টায় কাটিহার থেকে ছেড়ে একই দিনে ১০:১৫ ঘন্টায় শিলিগুড়ি পৌঁছাবে। একইভাবে, ট্রেন নং ২৬৩০১ (যোগবাণী-দানাপুর) বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ১৮-০৯-২০২৫ তারিখ থেকে প্রতিদিন (বুধবার বাদে) ৩:২৫ ঘন্টায় যোগবাণী থেকে ছেড়ে একই দিনে ১১:৩০ ঘন্টায় দানাপুর পৌঁছাবে। দুটি অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন – একটি যোগবাণী – ইরোড এবং অন্যটি সহরসা – ছেহরতা (অমৃতসর) এর মধ্যে চলাচল করবে। এই প্রকল্প এবং পরিষেবাগুলি একসাথে বিহারের জনগণের জন্য আঞ্চলিক এবং দীর্ঘ দূরত্বের রেল ভ্রমণকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।রেলপথ সেক্টরের বাইরে, প্রধানমন্ত্রী ভাগলপুরের পীরপৈন্তিতে ৩x৮০০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। নতুন প্রকল্পটি বিহারের সর্ববৃহৎ বেসরকারি সেক্টরের বিনিয়োগ, যার মূল্য ২৫,০০০ কোটি টাকা। এটি আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল, কম-নির্গমন প্রযুক্তির উপর ডিজাইন করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি উৎসর্গীকৃত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং বিহারের বিদ্যুৎ সুরক্ষা জোরদার করবে। তিনি পূর্ণিয়া বিমানবন্দরের নিউ সিভিল এনক্লেভে অন্তর্বর্তীকালীন টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করবেন, যা উত্তর বিহারের জন্য উন্নত বিমান চলাচল সুবিধা প্রদান করবে। তিনি নেসনেল মাখানা বোর্ডেরও সূচনা করবেন, যেখানে মাখানা চাষে বিহারের বিশিষ্টতা এবং কৃষকদের উপকারে আসার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বিহারে দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে, বিশেষ করে সংযোগ, গ্রামীণ ক্ষমতায়ন এবং কৃষির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলির উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন রাজ্যের উন্নয়নের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রের জনগনদের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করবে।