চুড়াচাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস

IMG-20250913-WA0151

চুড়াচাঁদপু: রক্তক্ষয়ী হিংসায় দু’বছর ধরে জ্বলছে মণিপুর। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। ঘর ছাড়া আরও বেশি। কিন্তু এই দুই বছরে একবারও মণিপুরে আসেননি প্রধানমন্ত্রী। শনিবার চূড়াচাঁদপুরের জনসভায় উপস্থিত হয়ে হিংসা ভুলে শান্তির আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বার্তা, ‘উন্নয়নের জন্য শান্তি জরুরি।’ উত্তর-পূর্বের রাজ্যে উন্নয়নের মেশিন চালিয়ে যেতে সংঘাত থামানোর আর্জি জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি ফেরাতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চূড়াচাঁদপুরের সভায় মোদি বলেন, “আশা ও বিশ্বাসের নয়া সকাল শুরু হয়েছে মণিপুরে। তবে উন্নয়নের জন্য শান্তি প্রয়োজন। গত ১১ বছরে একাধিক সংঘাত হয়েছে এখানে। তবে মানুষ শান্তির পথই বেছেছেন।”পাশাপাশি, এই বিষয়ে খুবই কম শব্দ খরচ করেননি তিনি। গোষ্ঠী সংঘাতের পর এই প্রথম রাজ্যে এসে চুড়াচাঁদপুরে ঘরহারাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী। আশ্বাস দিলেন, কেন্দ্র সরকার পাশে আছে।দু’বছর মণিপুরে না যাওয়ায় বিরোধীদের কোপের মুখে পড়েন তিনি। সেই দাগ মুছতে উপহারের ডালি সাজিয়ে মণিপুরে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী! শুরুতেই তিনি দেখা করেন দু’বছরের হিংসায় ঘরছাড়াদের সঙ্গে। চুড়াচাঁদপুর ছিল হিংসার ঘটনার কেন্দ্রস্থল। এখানে মৃত্যু হয় ২৬০ জনের। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে ৬৫ কিলোমিটার ভ্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। চুড়াচাঁদপুরে পৌঁছে মণিপুরকে “সাহস ও দৃঢ়তার ভূমি” বলে প্রশংসা করেন তিনি। তিনি চুড়াচাঁদপুরের ত্রাণ শিবিরে বয়স্ক এবং শিশুদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। ত্রাণ শিবিরে শিশুরা হাতে আঁকা ছবি , ফুলের তোড়া এবং পালকের টুপি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দেয়। এই সফরে মোদির সঙ্গে ছিলেন মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা। ২০২৩ সাল থেকে কুকি ও মেতেই জনগোষ্ঠীর হিংসায় মেতে রয়েছে মণিপুর। তবে গত ২ বছরে একবারও মণিপুর যাননি প্রধানমন্ত্রী মোদি। যার জেরে বিরোধীদের কোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই দাগ মুছতে শনিবার মণিপুরের জন্য উপহারের ডালি সাজিয়ে মণিপুরে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। চূড়াচাঁদপুরের সভায় মোদি বলেন, ”আশা ও বিশ্বাসের নয়া সকাল শুরু হয়েছে মণিপুরে। তবে উন্নয়নের জন্য শান্তি প্রয়োজন। গত ১১ বছরে একাধিক সংঘাত হয়েছে এখানে। তবে মানুষ শান্তির পথই বেছেছেন।” সরকার যে মণিপুরের হিংসা থামাতে লাগাতার কাজ করছে সে কথা মনে করিয়ে মোদি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরে সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা করিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেন, আপনাদের পরিবার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সকলে শান্তির পথে ফিরুন। আমি আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। ভারত সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। মণিপুরকে স্বাভাবিক করতে সরকার সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে। যারা ঘরছাড়া হয়েছে তাঁদের জন্য ঘর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে আক্রান্তদের জন্য।
২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মণিপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, গত ১১ বছরে মণিপুরে ৩৭০০ কোটি টাকার হাইওয়ে তৈরি হয়েছে। ৮৭০০ কোটি টাকার হাইওয়ে তৈরির কাজ চলছে। আমাদের সরকারে মণিপুরে রেল যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে। শীঘ্রই ইম্ফলকে জুড়ে দেওয়া হবে রেলের সঙ্গে। এর জন্য ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে সরকার। রেল-রোড বাজেট আগের চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে। শহরের পাশাপাশি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে গ্রামেও। আজ মণিপুরের সমস্ত মানুষ বিদ্যুৎ ও নলবাহিত জলের সুবিধা পান। যেটা একটা সময়ে ভাবা যেত না। একটা সময় ছিল, যখন দিল্লিতে প্রকল্প ঘোষণা হলেও এখানে পৌঁছতে পৌঁছতে দশক পেরিয়ে যেত। তবে আমাদের সরকার সেই ধারা বদলে দিয়েছে। সরকারের দৌলতে পাহাড়ে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক হাসপাতাল।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement