তিনটি মেট্রো রুটের সূচনা

IMG-20250822-WA0119

তৃণমূল গেলেই রাজ্যে আসল পরিবর্তন: মোদী  

বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে পা রেখেই তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের জন্য বেঁধে দিলেন স্লোগানও। তাঁর হুঙ্কার, তৃণমূল গেলেই রাজ্যে আসবে আসল পরিবর্তন। শুক্রবার মেট্রো রুটের উদ্বোধনে বাংলায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি কর্মসূচি সেরে এদিন দমদম সেন্ট্রাল জেলের ময়দানে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেখান থেকেই তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন ‘ভারত মাতাকি জয়’ বলে বক্তৃতা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।  বাংলায় তিনি  বলেন, ‘‘বড়রা আমার প্রণাম নেবেন। ছোটরা ভালবাসা। আমি এমন সময়ে কলকাতা এলাম যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কুমোরটুলিতে প্রতিমা গড়া চলছে। এর সঙ্গে যখন উন্নয়ন জুড়ে যায়, খুশি তখন দ্বিগুণ হয়ে যায়।’’ প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ‘প্রথমে কংগ্রেস, তার পর বামেদের শাসন দেখেছে বাংলা। ১৫ বছর আগে আপনারা মা-মাটি-মানুষে বিশ্বাস করে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে আগের চেয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হল। এটা পাকা যে, যত দিন বাংলায় তৃণমূলের সরকার থাকবে, তত দিন বাংলায় উন্নয়ন থমকে থাকবে। তৃণমূল গেলে তবেই আসল পরিবর্তন আসবে। টিএমসি যাবে, তবেই আসল পরিবর্তন আসবে।’ 

শুক্রবার  কলকাতা এয়ারপোর্টে নামে প্রধানমন্ত্রীর বিমান।  সেখান থেকে সড়কপথে যশোর রোড মেট্রো স্টেশনে পৌঁছে তিন সম্প্রসারিত লাইনের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে মেট্রোয় জুড়ে যায় ১৪ কিলোমিটার রাস্তা।  এদিন মেট্রোপথে জুড়ে যায় হাওড়া-এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদা।  অরেঞ্জ লাইনে রুবির সঙ্গে যুক্ত হল বেলেঘাটা। নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো চলছিল। সেটাই তা চলবে বেলেঘাটা পর্যন্ত। ফলে নিউ গড়িয়া থেকে সোজা যাওয়া যাবে সেক্টর ফাইভ। ইয়োলো লাইনে বিমানবন্দরের হাত ধরল নোয়াপাড়া। নোয়াপাড়া থেকে দমদম ক্যান্টনমেন্ট, যশোর রোড হয়ে, সোজা পৌঁছে যাওয়া যাবে দমদম বিমানবন্দরে। সব মিলিয়ে মেট্রো নেটওয়ার্কে একদিকে যেমন হাওড়ার সঙ্গে যুক্ত হল কলকাতা বিমানবন্দর, তেমনি এবার হাওড়া ময়দান থেকে গঙ্গার নীচ দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে সেক্টর ফাইভে। এদিন সরকারি অনুষ্ঠান সেরে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। সেই কর্মসূচি থেকে  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করে মোদী বলেন, ‘‘বাংলার জন্য যে টাকা আমরা সরাসরি রাজ্য সরকারকে পাঠাই, তার বেশির ভাগ লুট হয়ে যায়। আপনাদের জন্য খরচ হয় না। টিএমসি ক্যাডারের জন্য খরচ হয়। এই জন্য জনকল্যাণে পিছিয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। আগে ত্রিপুরা, অসমে এই হাল ছিল। যবে থেকে বিজেপি সরকার এসেছে গরিব কল্যাণ যোজনার লাভ ওই দুই রাজ্য পাচ্ছে।’’ ছাব্বিশের আগে এদিন স্লোগানও বেঁধে দেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি চাই!’’ তিনি বলেন, ‘‘পরিবর্তন, যা মেয়েদের সুরক্ষা দেবে, যা দোকান আর ঘর জ্বলা বন্ধ করবে, গরিবের অধিকার গরিবকে পাইয়ে দেবে, কৃষকের উন্নতি হবে। মোদী বলেন, ‘‘বাংলার গৌরবের অতীত আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই একসঙ্গে বলতে হবে, তৃণমূলকে সরাও। বাংলাকে বাঁচাও।’’ মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় বিজেপির সরকার বানান। আমরা শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নের বাংলা বানিয়ে দেব। বিকশিত বাংলা, মোদীর গ্যারান্টি। বাংলার উন্নয়নের জন্য বিজেপির কাছে রোডম্যাপ আছে। কিন্তু তৃণমূলের নেই।’’

মোদীর ভাষণে এদিন উঠে আসে ‘অপারেশন সিন্দুরে’র প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সেনারা আতঙ্কবাদীদের এমন শিক্ষা দিয়েছে যে, পাকিস্তানের ঘুম উড়ে গিয়েছে। দেশের তৈরি অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে। বাংলার সেনাদের শ্রদ্ধা।’’ এর আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন,  ‘‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়কদের তরফে আমি প্রণাম জানাচ্ছি। রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য উপস্থিত রয়েছেন। মঞ্চে উপস্থিত তিন জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁদের সকলকে আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বিহারে প্রধানমন্ত্রী একাধিক প্রকল্পের সূচনা করে বাংলায় এসেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ অনুপ্রবেশ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এই রাজ্যের সরকার বর্ডারে ৫৪০ কিলোমিটার অবৈধ বাংলাদেশি এবং অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতকে বরবাদ করছে। আপনাকে এই অনুপ্রবেশকারী মুক্ত বাংলা করতে হবে।’’ শুভেন্দুর আবেদন, ‘‘ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির বাঙালি ‘হিন্দু হোমল্যান্ড’ আপনাকেই বাঁচাতে হবে। আপনিই পারবেন। আমরা বাঙালিরা বাঁচতে চাই।’’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement