দু’জায়গায় বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর নাম, বিস্ফোরক তেজস্বী

IMG-20250810-WA0129

বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসআইআর নিয়ে উত্তপ্ত বিহারের রাজনীতি। এই আবহেই বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে  বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তাঁর দাবি, রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বিজয়কুমার সিনহার নাম রয়েছে ভোটার তালিকায় দু’জায়গায়। পাটনার লখিসরাই এবং বাঁকিপুর, দুই কেন্দ্রেই তাঁর নাম পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।  রবিবার এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই সরগরম হয় বিহারের রাজনীতি। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত কিছু ছবিও পোস্ট করেছেন আরজেডি নেতা। তাঁর অভিযোগ, দুই ভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার বিজয়কুমার। ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় তাঁর নাম রয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকাতেও দু’জায়গায় নাম এসেছে বিজয়কুমারের।  বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় এবং বিশেষ সংশোধন চালাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে একটি খসড়া তালিকাও প্রকাশ করেছে কমিশন। তা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। এই নিয়ে বিতর্কও দানা বেঁধেছে। এই আবহেই রবিবার  সাংবাদিক বৈঠকে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন তেজস্বী। বিজয়কুমারের নামে দু’টি এপিক নম্বর রয়েছে বলে দাবি করে আরজেডি নেতা বলেন, “এই এপিক নম্বরগুলি দু’টি পৃথক বিধানসভা কেন্দ্রে রয়েছে। দু’টি কার্ডে তাঁর বয়সও আলাদা। বাঁকিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে যে এপিক নম্বরটি রয়েছে, তাতে বয়স রয়েছে ৬০ বছর। লখিসরাইয়ে যে এপিক নম্বর রয়েছে, সেখানে তাঁর বয়স ৫৭ বছর।” তাঁর দাবি, বিজয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হোক। তেজস্বীর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই বিজয়ও মুখ খোলেন।  তাঁর যুক্তি, ”আমি ইতিমধ্যেই আমার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ফর্মও ফিলআপ করেছি। লখিসরাইয়ের ভোটার তালিকায় আমার নাম ছিল।” সেই সঙ্গেই বিজেপি নেতার দাবি, বাঁকিপুরের ভোটার তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দিতে চান তিনি। কেননা, দুই জায়গাতেই তাঁর নাম রয়েছে। তবে তেজস্বীর বক্তব্য, হয় দু’টি এপিক নম্বরের জন্য নথিতেই বিজয়কুমার স্বাক্ষর করেছেন, কিংবা বিশেষ এবং নিবিড় সংশোধনের গোটা প্রক্রিয়াতেই জালিয়াতি রয়েছে। এর আগে তেজস্বী অভিযোগ তোলেন, বিহারের খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁর নামই নেই। তাঁর নামই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন আরজেডি নেতা। কমিশন অবশ্য তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তেজস্বীর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। ওই সময় তেজস্বী যে ভোটার কার্ডটি দেখিয়েছিলেন, সেটিরও কোনও অস্তিত্ব নেই বলে দাবি কমিশনের। এরই মধ্যে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ নিয়ে নতুন অভিযোগ তুললেন তেজস্বী। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয়কুমারকে নিশানা করে তেজস্বী বলেন, “জালিয়াতি কে করছে, তা সাধারণ মানুষের জানা উচিত। লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রের এপিক নম্বর আইএএফ৩৯৩৯৩৩৭ এবং বাঁকিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এপিক নম্বর এএফএস০৮৫৩৩৪১।” খসড়া ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই মুখ খুলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর দাবি, অতীতে তাঁর পরিবার বাঁকিপুর বিধানসভা এলাকায় থাকত। বর্তমানে তিনি লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হিসাবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করিয়েছেন।  গত ১ আগস্ট বিহারের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। কমিশন আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, ওই খসড়া তালিকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তা কমিশনকে জানানো যাবে। খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৬৫ লক্ষের বেশি নাম। কমিশন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, মৃত, স্থায়ী ভাবে অন্যত্র চলে যাওয়া ব্যক্তিদের এবং একাধিক ঠিকানার ভোটার তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এই আবহেই এবার তেজস্বীর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিহারের রাজনীতি। 

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement