অসম ট্রাইবুনাল কোর্টের নোটিশ এল কোচবিহারের তুফানগঞ্জ এর মমিনা বিবির নামে

IMG-20250801-WA0076

কোচবিহার: দিনহাটার উত্তম ব্রজবাসী মাথাভাঙ্গার নিশিকান্ত দাস ও আলিপুরদুয়ারের অঞ্জলি শীলের পর এবার অসম ট্রাইবুনাল কোর্টের নোটিশ এল কোচবিহারের তুফানগঞ্জ এর মমিনা বিবির নামে। আর এই নোটিশকে হতবাক মোমিনা বিবি ও তার পরিবার। আর সেই পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার দুপুরে তুফানগঞ্জ এর ওই বাড়িতে ছুটে যান তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য চৈতি বর্মন বড়ুয়া সহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃত্ব। এদিন অভিজিৎ মোমিনা বিবির সাথে কথা বলার পাশাপাশি সব রকম ভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এদিকে মোমিনা বিবি নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করেছেন। ভোটার তালিকা, রেশন কার্ড, আধার কার্ড-সহ সমস্ত বৈধ নথিপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমাও দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও এনআরসির কর্তৃপক্ষের তরফে নতুন করে নোটিশ আসায় হতবাক মমিনার পরিবার। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। একের পর এক সাধারণ মানুষকে বারবার নোটিশ পাঠিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।এদিন মোমিনা বিবি বলেন, “আমি তো জন্মসূত্রে কোচবিহারেরই বাসিন্দা। জীবনের শুরু থেকেই এখানে ভোট দিচ্ছি। রেশন কার্ড, আধার সব আছে। তবু কেন আমাকে ‘বিদেশি’ হিসেবে দেখানো হচ্ছে সেটাই বুঝতে পারলাম না।এনআরসি নিয়ে এতদিন পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে যেভাবে টার্গেট করা হচ্ছিল,এবার বিষয়টি আরও গভীরে। এবার সরাসরি অসমের ফরেন ট্রাইব্যুনাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের বিরুদ্ধে নোটিশ এই প্রবণতা ভয়াবহ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন, “যেখানে একজন মহিলা বছরের পর বছর কোচবিহারে বাস করছেন, ভোট দিয়েছেন, সরকারি পরিষেবা নিচ্ছেন তাঁকে এখন অসমে গিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে? এটা কোনো যুক্তি মানে?”এনআরসি আতঙ্কের নতুন অধ্যায়ে প্রথমবার উত্তমকুমার ব্রজবাসী, দ্বিতীয় অঞ্জলি শীল, এরপর নিশিকান্ত দাস, এখন মোমিনা বিবি। এরা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিনের ভারতীয় নাগরিক। তবু একের পর এক নোটিশ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, যেন ‘বিদেশি’ হয়ে পড়েছেন তাঁরা নিজ ভূখণ্ডে!প্রশ্ন উঠছে, এনআরসি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের সমন্বয় কোথায়? পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের অসমের ফরেন ট্রাইব্যুনাল কীভাবে টার্গেট করছে? কতজন সাধারণ মানুষ এখন এই হয়রানির শিকার? আজ মোমিনা বিবি, কাল হয়তো আপনিও! সময় এসেছে প্রশ্ন করার—এটা নিরাপত্তা, না নিছক রাজনৈতিক কৌশল?তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, আমরা জানি বিজেপি দিল্লির পার্টি। গুজরাট হরিয়ানা বিভিন্ন জায়গায় বাঙ্গালীদের হয়রানি করা হচ্ছে। সেখানে তৃণমূলের সাংসদরা যাচ্ছে। বিজেপি কোথায়। পাশাপাশি কোচবিহার জেলার তিন জনের কাছে এনআরসির নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিজেপি নেতারা যদি বাঙালির দল হয় তাহলে এদের পাশে দাঁড়াক। কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসির নামে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ধারণ করা হচ্ছে বেশি করে। ইতিমধ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সড়ক হয়েছেন। আমরা এদের সকলের পাশে আছি।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement