মালদা: তিনতলা ভবন রয়েছে, আছে ক্লাসরুম রয়েছে যাবতীয় পরিকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষিকাও রয়েছে পর্যাপ্ত, শুধু ছাত্ররাই নেই৷ অথচ একটা সময় প্রায় ৮০০ পড়ুয়া ছিল। ক্লাস রুম ছিল ১৬ টি। এখন পড়ুয়া ২০০ জন। ছটি ক্লাসরুমে পড়াশোনা করা হয়। প্রতি ক্লাসে দুটি করে সেকশন ছিল৷ এখন সেসব অতীত৷ কেন এমন হল? উত্তর মিলছে, ক্ষুধার রাজ্যে শিক্ষা গদ্যময়৷ সেকারণেই স্কুলে পড়তে পড়তেই ছাত্ররা হয়ে উঠছে শিশু শ্রমিক৷
ভয়াবহ এই ছবিটি কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের নয়, খোদ মালদা শহরের৷ ইংরেজবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মালঞ্চপল্লি মিনু ঝা বয়েজ হাইস্কুল৷ রয়েছেন ১২ জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষক শিক্ষিকা, একজন প্যারাটিচার, একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার৷ এই স্কুলই এখন পড়ুয়ার সংকটে উঠে যাওয়ার অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে৷
প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বলকুমার দাস জানাচ্ছেন, “আমি ২০১৯ সালে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েছি৷ আজ যেমন ছাত্রের সংকট, একসময় তা কিন্তু ছিল না৷ তখন আটশোর উপর পড়ুয়া ছিল৷ এর প্রথম এবং প্রধান কারণ, এলাকার আর্থ সামাজিক পরিকাঠামো৷ তার সঙ্গে রয়েছে মানুষের সচেতনতার অভাব৷ যারা এই স্কুলে পড়ে, তাদের বেশিরভাগই একেবারে নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসে৷
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী৷l তিনি জানান, “শুধু এই স্কুল নয়, মালদা জেলায় অনেক স্কুলের একই পরিস্থিতি৷ আমি তেমন অনেক স্কুল ঘুরে দেখেছি৷ এই স্কুলগুলো এখন শিশু শ্রমিকদের সোর্স এরিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এই পড়ুয়ারা বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে চলে যাচ্ছে৷
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শক্তিপদবাবু আরও বলেন, “এই সমস্যার সমাধানে শুধু মানুষজনকে বোঝালেই হবে না, তাদের আর্থিক পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে৷ এর জন্য বড় পরিকল্পনা নিতে হবে৷
এই দিয়ে মালদা জেলা, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ডি আই মলয় মন্ডল জানান প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে এ বিষয়টি জানা আছে আমরা এ বিষয়ে খতিয়ে দেখব যদি এই ফিডার সিস্টেমটিকে রিসাবেল করা যায় সেটা দেখা হবে।
এদিকে বিজেপির পাল্টা দিয়েছে তৃণমূল। মালদা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি, শুভময় বসু জানান প্রতিটা গ্রামাঞ্চলে এত স্কুল বেড়েছে যার ফলে সবাই গ্রামীণ বেশিরভাগ পড়াশোনা করছে। শিক্ষার দিক থেকে আমাদের সরকার অনেক কিছু করছে এবং শিক্ষার দিক থেকে আমরা অনেক এগিয়ে রয়েছি।