সপ্তর্ষি সিংহ
একজন বিজেপির ভোটে জিতে আসা বিরোধী দলনেতা, অন্যজন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি। বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। বাংলায় আসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপিকে প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা দিয়েছে। এই আবহেই প্রশ্ন উঠছে, এখন কে হবেন বঙ্গ বিজেপির বস? বিজেপিতে এক নেতা এক পদ প্রসঙ্গে প্রফেসর সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে দলে প্রশ্নটা তীব্র হয় চব্বিশের লোকসভা ভোটের পর। একুশে ভোটে সত্তরের চৌকাঠ পেরিয়ে থামতে হয়েছিল বিজেপিকে। চব্বিশের লোকসভায় ২০১৯-এর আঠারোর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় বারোয়। বামদের সরিয়ে যাঁর হাত ধরে বাংলার ১ নম্বর বিরোধী হয়েছিল বিজেপি, তিনি হলেন আরএসএসের প্রিয় পাত্র দিলীপ ঘোষ। তিনি এখন দল থেকে অন্তরালে। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি কে হবেন, তাই নিয়েই আলোচনা চলছে বাংলার রাজনৈতিক অলিন্দে। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ সহ আরও দুই রাজ্যের জন্য রাজ্য সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজেপি সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে। মহারাষ্ট্রে সভাপতি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। আর উত্তরাখণ্ডে নির্বাচন পরিচালনা করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হর্ষ মলহোত্রা।
বিজেপির একটি অংশের মতে, পূর্ণ সময়ের সভাপতির প্রয়োজন রয়েছে। তাই নতুন কাউকে সভাপতি করা উচিত। আর বিজেপি একটি সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে চলে। ফলে ভোটের জন্য সময় কম থাকলেও অসুবিধা হবে না। বিজেপি সূত্রে খবর, ২ জুলাই সভাপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা নেবেন দিল্লির দূত রবিশঙ্কর প্রসাদ। মনোনয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া ২ তারিখেই সম্পন্ন হবে। পরের দিন, ৩ জুলাই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে পরবর্তী মেয়াদের সভাপতির নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে। ‘সভাপতি বরণ’ অনুষ্ঠানও ৩ জুলাই সেরে নেওয়া হবে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরে সেপ্টেম্বর মাসে সুকান্ত মজুমদার রাজ্য বিজেপির সভাপতির দায়িত্ব হাতে পান। বিজেপিতে যেহেতু এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি রয়েছে, তাই সুকান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরে রাজ্য সভাপতির পদ সামলাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে এ রাজ্যে আরও সময় দিতে হবে। সেটা সুকান্তই করবেন, না কি অন্য কেউ দায়িত্ব নেবেন, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিজেপির একাংশের মতে, মন্ত্রিত্ব সামলানোর সঙ্গেই সভাপতি হিসাবে প্রচুর পরিশ্রম করছেন সুকান্ত মজুমদার। এখন নতুন সভাপতি না করে তাঁকে সভাপতি হিসাবে রেখে দেওয়া হলে ভাল হবে। নতুন কেউ দায়িত্ব পেলে ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও মাথা চাড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। শেষ পর্যন্ত কে বসতে চলেছেন এই পদে, তা জানা যাবে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই।