কলকাতা: কর্পোরেট গিফট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (সিজিএআই), যা কোম্পানিজ অ্যাক্ট ২০১৩-এর অধীনে নিবন্ধিত একটি সংগঠন, আজ কলকাতার হায়াত রিজেন্সিতে তাদের জাতীয় সভা ও পণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৫০০-রও বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন, যাদের মধ্যে ছিলেন কর্পোরেট গিফটিং শিল্পের শীর্ষস্থানীয় নির্মাতা, সরবরাহকারী ও রিসেলাররা।২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সিজিএআই-র মূল লক্ষ্য ছিল নির্মাতা ও রিসেলারদের এক ছাতার নিচে এনে ব্যবসা বৃদ্ধির সুযোগ, নেটওয়ার্কিং এবং শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করা। বর্তমানে মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, পুনে ও আহমেদাবাদ সহ ছয়টি শহরে সিজিএআই-র অধ্যায় রয়েছে এবং এর সদস্য সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।ভারতে কর্পোরেট গিফটিং শিল্পের বাজার মূল্য ৫০,০০০ কোটি টাকারও বেশি এবং এই শিল্পক্ষেত্র সরাসরি প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের জীবিকা নিশ্চিত করে, যার বেশিরভাগই এমএসএমই খাতের সঙ্গে যুক্ত। এত বড় পরিসরের হলেও, এই শিল্পে কোনও একক প্রভাবশালী সংস্থা নেই—এটি যৌথ উন্নয়ন ও পার্টনারশিপের উপর নির্ভর করে।অনুষ্ঠানে সিজিএআই-র চেয়ারম্যান শ্রী শীতল শাহ বলেন, “কলকাতা অধ্যায়ের এই সভা প্রমাণ করে আমরা প্রতিটি অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সংযুক্ত করার এবং তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের এই শিল্প মূল্য সংযোজন, ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি এবং ক্লায়েন্ট সম্পর্ক আরও মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।সিজিএআই-র সভাপতি শ্রী সঞ্জয় পোদ্দার বলেন, “আয়কর আইনের ১৯৪আর ধারা বর্তমানে আমাদের শিল্পের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চালু হওয়া এই বিধান অনুযায়ী উপহার পাওয়ার ক্ষেত্রে কর দিতে হয় এবং কর কাটার দায়িত্ব পড়ে উপহারদাতার ওপর। বিশেষ করে কাস্টমাইজড ব্র্যান্ডেড পণ্যের ক্ষেত্রে যার কোনো সরাসরি বিক্রয়মূল্য নেই, সেই সমস্ত উপহারের মূল্য নির্ধারণ করাই কঠিন। এতে প্রোমোশন বাজেট কমছে, ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের ওপরও প্রভাব পড়ছে।সিজিএআই-র সহ-সভাপতি শ্রী রবীন্দ্র টান্তিয়া বলেন, “এই সভা বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের একত্রিত করেছে। নিয়ন্ত্রক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও শিল্পের এই উদ্দীপনা ও মানসিক দৃঢ়তা খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। আমরা আমাদের সদস্যদের পাশে আছি এবং তাদের কণ্ঠস্বর জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।অনুষ্ঠানে সিজিএআই-র অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন: শ্রী দীপক বোথরা (সচিব, কলকাতা), শ্রী রাজ আগরওয়াল (বেঙ্গালুরু), শ্রী অনিল মুল্লিক (দিল্লি), শ্রী মেহুল রাঠোর (মুম্বই), মি. শ্রীকান্ত দাদা (হায়দরাবাদ), শ্রী শ্রেয়াংশ লোহিয়া (কলকাতা), শ্রী রাহুল ঝুনঝুনওয়ালা (কলকাতা), এবং শ্রী অনিল কুমার পোদ্দার।সিজিএআই নিয়মিতভাবে সরকারের কাছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে শিল্পের সমস্যা ও দাবিগুলি তুলে ধরে চলেছে। সংগঠনের আশা, ১৯৪আর ধারাটি পুনর্বিবেচনা করা হবে যাতে কর্মসংস্থান রক্ষা পায়, এমএসএমই গুলি টিকে থাকতে পারে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাত আরও বিকশিত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ব্র্যান্ডিং এবং ক্লায়েন্ট এনগেজমেন্টে অবদান রাখতে পারে।