আজ রথ, উৎসবের আমেজ দিঘায় 

IMG-20250626-WA0135

তদারকিতে মুখ্যমন্ত্রী, সতর্ক প্রশাসনও 

জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিষ্ঠার পর আজ দিঘায় প্রথম রথযাত্রা উৎসব হতে চলেছে। সাজ সাজ রব সৈকত নগরীতে। আজ রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষ্যে দিঘায় প্রচুর মানুষের সমাগম হতে চলেছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই তিনি দিঘায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। অক্ষয় তৃতীয়ায় দিঘায় দ্বারোদ্ঘাটন হয় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। এবছরই প্রথমবার সেখানে রথযাত্রার উৎসব উদযাপিত হবে। বৃহস্পতিবারই দিঘায় রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রথযাত্রার সময় রাস্তায় লোক থাকবে না। পদপিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে রাস্তার দু’ধারে ব্যারিকেড করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও  জানান, ব্যারিকেডের ও পার থেকে রথ দেখতে পারবেন সাধারণ মানুষ। তা ছাড়া ব্যারিকেডের সঙ্গে রথের দড়িও লাগানো থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফলে দু’ধারের ব্যারিকেডের ও পারে থাকা মানুষ রথের দড়িও ছুঁতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে তিনটি রথ এগোবে, ভিড় কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে একটি বৈঠকও করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ইসকনের রাধারমণ দাস। রথও পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী।  মমতা জানান, আড়াইটে থেকে রথের চাকা গড়াবে। এ বছর দিঘায় ব্যাপক ভিড় প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিস্তর পদক্ষেপ করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এ সময়ে রাস্তার দু’ধারে ব্যারিকেড রাখা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় দাঁড়াবে রথটি। সাধারণ মানুষ তা দর্শন করতে পারবেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে রথের রশি স্পর্শ করতে পারে সে জন্য তা ব্যারিকেডের সঙ্গে ছোঁয়ানো থাকবে। উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজনের তদারকিতে বুধবারই দিঘায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পৌঁছে যান রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, অর্থ এবং স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। যে সব বিষয় এই রথযাত্রার উৎসবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, সেই সব দফতরের মন্ত্রীদের দিঘায় হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। রাস্তায় ধার জুড়ে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি হয়েছে। নজর রাখতে হচ্ছে, যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন থাকে। সম্প্রতি কুম্ভমেলা এবং বেঙ্গালুরুতে আইপিএল জয় উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তেমন ঘটনা যাতে রথযাত্রা উপলক্ষে না ঘটে , সে দিকে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের দিয়ে গোটা দিঘা শহর-সহ জগন্নাথ মন্দির এবং জগন্নাথের মাসির বাড়ি সাজানো হয়েছে।  মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শুক্রবার রথের দিন সকাল থেকেই জগন্নাথ মন্দির খোলা থাকবে। সেই সময় দর্শনার্থীরা মন্দিরে যাওয়ার সুযোগও পাবেন। পাশাপাশি, সকাল ৯টা থেকে রথযাত্রার প্রস্তুতি এবং উপাচারও শুরু হয়ে যাবে।

অত্যধিক ভিড়ের কারণে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না-ঘটে, সেই কারণে রথ চলার সময় সাধারণ মানুষকে ব্যারিকেড টপকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ২টোয় রথে আরতি এবং পুজো শুরু হবে। আড়াইটে নাগাদ মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হবে। পৌনে এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রথ পৌঁছোবে মাসির বাড়ি। বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “প্রথম বার দিঘায় রথযাত্রা হচ্ছে। তাই পরিস্থিতি কী হয়, সেই বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকতে চাই। সাধারণ মানুষের জন্য রথ যেতে যেতে কিছুটা সময় থামবে। মানুষ দেখতে পাবেন। সেই সঙ্গে তাঁরা যাতে দড়ি স্পর্শ করতে পারেন, সেই জন্য ব্যারিকেডের সঙ্গে রশি ছোঁয়ানো থাকবে। উভয় যাত্রা যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাপন হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য।” 

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement