ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী

IMG-20250610-WA0072

ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, সে ব্যাপারে এবার বিধানসভায় ব্যাখ্যা দিতে শোনা গেল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।  মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি সংরক্ষণ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানান, ওবিসি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট  একটি নির্দেশ দেয়। বেশ কিছু ওবিসিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছি। সেই মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘যাঁরা বলছেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ, তাঁরা বিভ্রান্ত করছেন। ওবিসি ‘এ’ বিভাগে ৪৯টি এবং ওবিসি ‘বি’ বিভাগে ৯১টি শ্রেণি রয়েছে। আরও ৫০টি অন্তর্ভুক্ত হবে। সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আমরা করে ফেলব।’ এর রেশ ধরে মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, ‘বর্তমানে আমাদের রাজ্যে ১৪০ টি ক্যাটাগরি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯ ওবিসি-এ, ৯১ ওবিসি-বি। আর‌ও ৫০ টি ক্যাটাগরির জন্য সার্ভে করার কাজ চলছে। সিপিএমের আমলে কোনও সার্ভে করা হয়নি। আমাদের সময়ে, ২০১২ সাল থেকে এই সার্ভে করা হচ্ছে।’ একইসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী  এও জানান, ‘১৭ শতাংশ সংরক্ষণ করা হয়েছিল রাজ্যের তরফ থেকে। তবে হাইকোর্ট সেটা বাতিল করে ৭ শতাংশ করেছে। এই নিয়ে আদালতে এখনও পর্যন্ত মামলা চলছে। একইসঙ্গে মামলা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। আর সেই কারণেই  ভর্তি বা চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’ পাশাপাশি তিনি এও জানান, রাজ্য সরকার অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বেঞ্চ মার্ক সার্ভে চালিয়েছে এবং পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষজনকে চিহ্নিত করে সেই তালিকাও তৈরি করেছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন এও জানাতে ভোলেননি, এর সঙ্গে জাত বা ধর্মের কোন বিষয় নেই। রাজনৈতিক দলগুলো এই নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। একমাত্র পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করেই এই কাজ করছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়িয়ে এ ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে চান বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে অধ্যক্ষ তাঁকে বলার অনুমতি দেয়নি। এরপরই প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষ হয়ে যায়। প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষে বিধানসভার ভেতরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির বিধায়করা। পরে বাইরে এসেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এ অভিযোগও তুলতে শোনা যায়, ‘মুসলিম তোষণের সরকার চলছে। সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কি বিবৃতি দিতে পারেন?’ একইসঙ্গে তিনি এও জানতে চান,কেন বিরোধীদের বলতে দেওয়া হলো না।  প্রসঙ্গত, গত ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে প্রায় ১২ লক্ষ সার্টিফিকেট অকেজো হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরও।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement