খুনের পরও রাজার অ্যাকাউন্ট থেকে সোনমের পোস্ট  

IMG-20250610-WA0034

যত সময় গড়াচ্ছে ‘হানিমুন মার্ডার’ কেসে ততই সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুনের পর স্বামীর সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ও ফোন ব্যবহার করেছিলেন সোনম। শুধু তাই নয়, স্বামীর অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টও করেছিলেন তিনি। তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।তদন্তকারীদের সন্দেহ,  মেঘালয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে হত্যা করা হয়েছিল সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর চোখের সামনেই। কিন্তু, এখানেই থামেননি সোনম। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেছিলেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘সাত জন্মো কা সাথ হ্যায়।’ তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই সোনমের এই কীর্তি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৩ মে রাজাকে খুন করা হয়। তার পরে দুপুর ২টো ১৫ মিনিটে রাজার ফোন এবং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ওই পোস্ট করেন সোনম। তদন্তকারীরা মনে করছেন, স্বামী বেঁচে রয়েছেন এই বার্তা দিতে এবং পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য তদন্তের হাত থেকে রেহাই পেতেই এই কৌশল নিয়েছিলেন সোনম।সূত্রের খবর, রাজাকে খুন করা হয়েছিল ২৩ মে। ওই দিনেই সোনম এবং রাজার নিখোঁজ হওয়ার খবর সামনে এসেছিল। রাত আড়াইটের সময়ে এই পোস্ট করেছিলেন সোনম। গত ১১ মে রাজার সঙ্গে বিয়ে হয় সোনমের। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন দু’জন। ২৩ মে সেখান থেকেই তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান। ১০ দিন পরে রিয়ার আরলিয়াংয়ের এক খাদে রাজার দেহ উদ্ধার হয়। রাজার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যে হাতে পেয়েছে মেঘালয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, তাঁর মাথার পিছনের দিকে ঘাড়ের উপরে একটি গভীর ক্ষত মিলেছে। কপালের উপরের দিকে আর একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আভাস, ধারালো কিছু দিয়ে মাথার দু’দিকে আঘাত করা হয়েছিল রাজাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজার শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল। রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের এক ধাবা থেকে গ্রেফতার হন সোনম। তিনি ধাবার মালিকের কাছে দাবি করেন, তাঁর গয়নাগাটি চুরি হয়েছে। তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। কী ভাবে তিনি সেখানে এসেছেন, জানেন না। তদন্তের অভিমুখ এখনও পর্যন্ত যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে প্রায় স্পষ্ট যে, রাজার স্ত্রী সোনমই স্বামীকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছিলেন। কিন্তু গোটা এই পর্বে সমাজমাধ্যমে মেঘালয় এং উত্তর-পূর্ব ভারতকে নিয়ে বহু মানুষ আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। ওই সমস্ত মন্তব্যকে জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য বলে দাবি করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে মেঘালয়ের একাধিক নাগরিক সংগঠন।মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি এলাকার একটি খাদ থেকে রাজার দেহ উদ্ধার এবং সোনম ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার পর একাধিক জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। সেখানে কেউ কেউ দাবি করেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতে সক্রিয় দস্যুরা এ ভাবেই মানুষ মেরে টাকাপয়সা লুট করে। কারও কারও বক্তব্য ছিল, উত্তর-পূর্ব ভারতের দলিতদের অপসারণ করা হোক। এমনকি সোনম গ্রেফতার হওয়ার পরেও তাঁর বাবা দেবী সিংহ মেঘালয় পুলিশকে দুষে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছিলেন।আগেই মেঘালয় এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement