এবার মালয়েশিয়ায় গিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই তাঁর বক্তব্যে উঠে এল পিওকে প্রসঙ্গে। অপারেশন সিন্দুরের সাফল্য তুলে ধরতে ও পাকিস্তানের পর্দাফাঁস করতে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভারতের নানা সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। তার একটিতে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার পর মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। রবিবারের সকালে কুয়ালালামপুরে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। সেখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সুর চড়ানোর আহ্বান জানান অভিষেক। জঙ্গিকার্যকলাপে পাকিস্তানের ভূমিকা কী, তা সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার কথাও বলেন তিনি। কুয়ালালামপুরে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথোপকথন হয় অভিষেকদের। অভিষেক যে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, তার নেতৃত্বে রয়েছেন জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয়কুমার ঝা। ওই দলে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। কথোপকথনের সময় অভিষেক বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে দশকের পর দশক ধরে কথা চলছে। ধরন বদলেছে, সরকার বদলেছে। কিন্তু একটি বিষয়ই স্থির রয়েছে, তা হল পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২২ এপ্রিল ২৬ জনকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। তাঁদের ধর্ম এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে। আমি চাই, শাসকেরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করুক, তা হল পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর পুনরুদ্ধার। নয়তো এই সন্ত্রাস হামলা চলবেই।’’ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানও মালয়েশিয়ায় গিয়ে স্পষ্ট করেছেন অভিষেকরা। কেন ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালানো হয়েছিল, তা-ও তুলে ধরেছেন তাঁরা।কুয়ালালামপুরে হাই কমিশনের তরফে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের পাশাপাশি ভারতীয় মুসলিমেরাও এই সন্ত্রাসবাদী হামলার সমালোচনা করেছেন। অভিষেক জানিয়েছেন, ২২ এপ্রিলের হামলার পরে ভারত প্রায় দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করেছিল, যাতে পাকিস্তান এই নিয়ে কোনও সুবিচার করে। কিন্তু সে সব হয়নি। ১৪ দিন পরে সিন্দুর অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা এখানে কিছু প্রমাণ সঙ্গে করে এনেছি। সমাজমাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানি সেনার শীর্ষকর্তারা জঙ্গিদের শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছেন। বিশ্বকে আর কত বড় প্রমাণ দেবে ভারত?’’ বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তারা জঙ্গিদের শেষকৃত্যে উপস্থিত হয়েছে, সে ছবি গোটা বিশ্ব দেখেছে। পাবলিক ডোমেনে সমস্ত প্রমাণ রয়েছে। ফলে, আলোচনা আর সন্ত্রাস কোনও ভাবেই একসঙ্গে চলতে পারে না।অভিষেকের কথায়, ‘অনেকেই বলেন, ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব ৪-৫ দশক ধরে চলছে। এটা আমিও মানি। কিন্তু ভারত বার বার এই দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করেছে। সময়ের সঙ্গে সব কিছু বদলে গেলেও, পাকিস্তান কিন্তু বদলায়নি। ২২ এপ্রিল যা হয়েছে, এর পর যদি আলোচনা হয়, আমি বলব, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের দাবি ছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে আর কোনও কথা নয়। না হলে এটা চলতেই থাকবে। আমি বিশ্বাস করি কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’