ফের কোভিড আতঙ্ক, মাস্ক পরার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

IMG-20250522-WA0259

নয়াদিল্লি: এক মাসে নতুন করে ১৮২ জন কোভিড-১৯ আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। তারপরেই তড়িঘড়ি জনসাধারণকে মাস্ক পড়তে অনুরোধ করল কেরল সরকার। বুধবার তিরুবনন্তপুরমে ব়্যাপিড রেসপন্স টিম (আরআরটি)-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, কেরলেও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। বৈঠক শেষে বীণা বলেন, “জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যান্য দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে।”
এরপরেই স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য দপ্তর। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে- ঠান্ডা, গলা ব্যাথা, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দিলে মাস্ক পরুন। হাসপাতালে গেলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিদের জনসমক্ষে মাস্ক পরা উচিত। স্বাস্থ্য কর্মীদের কর্তব্যরত অবস্থায় মাস্ক পরতে হবে। হাসপাতালগুলিকে আরটি-পিসিআর কিট ব্যবহার করে করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি পরীক্ষা এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের মজুদ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মে মাসে কেরলে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বীণা জানিয়েছেন, কোট্টায়ামে সর্বোচ্চ ৫৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এরপরেই এর্নাকুলামে ৩৪ জন এবং তিরুবনন্তপুরমে ৩০ জন। ওমিক্রনের উপজাতি জেএন .১, এলএফ.৭ এবং এনবি ১.৮ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। ইয়েল মেডিসিন জানিয়েছে, জেএন. ১. হল বিএ. ২. ৮6 বা পিরোলা-এর একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট। বিজ্ঞানীদের মতে এই উপজাতিগুলি অত্যন্ত সংক্রামক। কিন্তু এর ফলে মৃদু জ্বর হতে পারে। বীণা জানিয়েছেন, রাজ্য-স্তরের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সংক্রমণের হার কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা রাজ্য সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। ইতিমধ্যেই সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যাণ্ডে বিপুল হারে ছড়াতে শুরু করেছে করোনা। একাধিক জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে।যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতে এখনও করোনা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে পরিসংখ্যান পেশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, দেশে এখনও অবধি আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭। যদিও এই হিসেব ১৯ মে অবধি। ১২ মে অবধি সংখ্যাটা ছিল ১৬৪। আর তাই স্বাস্থ্যমন্ত্রক যতই স্থিতিশীল বলুক, গত সাত দিনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০০ বেড়েছে। কেরলে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে আক্রান্ত ৬৯ জন। একমাত্র মৃত্যুও সে রাজ্যেই। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে মহারাষ্ট্র। আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪। এরপর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৩৪), কর্নাটক (৮), গুজরাট (৬), দিল্লি (৩)। হরিয়ানা, রাজস্থান ও সিকিমে আক্রান্তের সংখ্যা এক জন করে। তবে বাংলায় এখনও কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি। এবার করোনার যে ভ্যারিয়ান্ট আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তা হল জেএন১। এখন প্রশ্ন এই ভ্যারিয়ান্ট কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।যদিও এই ভ্যারিয়ান্টের দেখা এখনও মেলেনি। এটি বিএ.২.৮৬ এর একটি সাব ভ্যারিয়ান্ট। এই ভ্যারিয়ান্টই ২০২৩ সালে ভয় ধরিয়ে ছেড়েছিল গোটা বিশ্বে। কিন্তু বৈজ্ঞানিকরা এখন দাবি করছেন, এই সাব ভ্যারিয়ান্টই নাকি এখন আতঙ্কের মূল কারণ। এই ভ্যারিয়ান্টের সঙ্গে ওমিক্রনের অনেকটা মিল রয়েছে। তাই এখন যারা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের মধ্যে দুর্বলতা, কাশি, গলায় সংক্রমণ, পেটের গন্ডগোলের মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।তাই এই উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হলে উপসর্গ দেখা দেয় দুই থেকে তিন দিন পর। তারপর তা ছড়াতে শুরু করে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement