দিলীপের স্ত্রী রিঙ্কুর ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু

IMG-20250513-WA0242

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের ছেলের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য।মঙ্গলবার নিউটাউনের সাপুরজি আবাসন থেকে রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের ছেলে প্রীতম দাশগুপ্তকে অবচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই রহস্যমৃত্যু নিয়েই উঠছে একাধিক প্রশ্ন।মৃত্যুর কারণ ঘিরে রয়েছে ধোঁয়াশাও। দেহের ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে মৃত্যুর কারণ।তার আগে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলতে চাননি তদন্তকারীরা। বিধাননগর কমিশনারেটের অন্তর্গত টেকনো সিটি এলাকার সাপুরজির একটি আবাসনে বাস করতেন ২৮ বছরের প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়। বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে আবাসন থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সেই অবস্থায় টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের পাশে অবস্থিত নিউ টাউন থানার উল্টো দিতের ওহিয়ো হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশে খবর দিলে, পুলিশই গিয়ে দেহ বের করে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে খবর। মৃত্যুর কারণ ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে দেহটি নিয়ে যাওয়া হয়।পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আর জি কর মেডিক্যাল হাসপাতালে। সূত্রের খবর, প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়ের গলায় ফাঁসের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ওই আবাসনে তিনি একা থাকতেন, না কি অন্য কেউ থাকতেন, তাও জানা যায়নি। পরিবারের কেউ এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি। প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়ের ফোনটি তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। শেষ কার সঙ্গে কথা বলেন, তা জানা যায়নি। তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন কি না, তা নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়েছে। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজও শুরু হচ্ছে। পুত্রহারা রিঙ্কু মজুমদার জানান, আবাসনে দুই বন্ধুর সঙ্গে থাকতেন ছেলে। তাঁদের মধ্যে এক জন যুবক এবং এক জন তরুণী। মঙ্গলবার সৃঞ্জয়ের দুর্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। সোমবার রাতেও ছেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে সকালে দেরিতেই ঘুম থেকে ওঠে। অসুস্থ জানতে পেরে সকালে ফ্ল্যাটে যাই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল…। তখন মুখ থেকে গাঁজলা উঠছিল।’’ তিনি জানিয়েছেন, ‘মাদার্স ডে’ উপলক্ষে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন ছেলে। কেক-ও নিয়ে গিয়েছিলেন। আনন্দ করেছেন। তবে সোমবার তাঁকে ফোন করে ছেলে বলেছিলেন, তাঁর একা থাকতে ইচ্ছা করছে। রিঙ্কুর কথায়, ‘‘ বলেছিল, একা থাকতে ইচ্ছা করছে। বাড়িতে কাউকে আসতে মানা করে দাও। অফিসে জানিয়ে মঙ্গলবার ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নিয়েছিল।’’
গত ১৮ এপ্রিল দিলীপ ঘোষ ও রিঙ্কু মজুমদার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরেই রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলের রহস্যমৃত্যু ঘটল। দিলীপ ও রিঙ্কুর বিয়ের সময় রাজ্যের বাইরে ছিলেন সৃঞ্জয়। বিয়েতে আসতে না পারলেও মাকে নবজীবনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। উপহার নিয়ে ফিরবেন বলে ফোনে জানিয়েছিলেন তিনি। অত্যন্ত খোলামনেই মায়ের সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় সংবাদমাধ্যমে ওই যুবক বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে খুবই খুশি যে আমার মা খুশি। গত অনেক বছর সমাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছেন মা। আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সময় দিতে পারি না। মা যে ব্যক্তিগত জীবনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি খুবই খুশি। মা আমাকে প্রচণ্ড ভালবাসেন, আমিও মাকে খুব ভালবাসি। সবসময় মায়ের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। মায়ের সব সিদ্ধান্ত খুব স্বচ্ছ এবং যুক্তিগ্রাহ্য হয়। আমিও বুঝতে পারি, মা অনেকগুলো বছর একাই যুদ্ধ করেছে। ঠিকই আছে। আমি খুব খুশি।” কিন্তু মায়ের বিয়ের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রীতমের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। রহস্যমৃত্যুর কিনারা করতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement