পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। সেই হামলায় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ভারতের তরফে হামলা হয়েছে, এই খবর সামনে আসার পরেই পাল্টা হুমকি দিতে শুরু করে ইসলামাবাদ। এমনকি ভারতে প্রত্যাঘাত করার হুঁশিয়ারিও দেয়। কিন্তু আর্ন্তজাতিক মহলের চাপে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। অপারেশন সিন্দুরের পর উল্টে পাকিস্তানকেই ধমক দেয় আমেরিকা। ট্রাম্পের দেশ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, ‘ভুলেও পাল্টা হামলা করতে যেও না।’ অপারেশন সিন্দুর-এর পর ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। পাকিস্তানকে সতর্ক করে আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে কোনও রকম হামলার কথা স্বপ্নেও ভেবো না। যুদ্ধ করার কথা চিন্তাও কোরো না।’ এৃর সঙ্গে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে রুবিও বলে দিয়েছেন, ‘জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার স্বাধীনতা ভারতের আছে।’চিনের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজ ভোরে ভারত যে সেনা অভিযান চালিয়েছে, তা দুঃখজনক। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। ভারত এবং পাকিস্তান চিরকাল পরস্পরের প্রতিবেশী হিসেবেই বিরাজ করবে। তারা চিনেরও প্রতিবেশী। চিন সব রকমের সন্ত্রাসের বিরোধী। দু’পক্ষের কাছেই আবেদন, বৃহত্তর স্বার্থে, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সংযত থাকুন, এমন কিছু করবেন না, যাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে’। ভাবগতিক বুঝে বেলার দিকে সুর নরম করে পাকিস্তান।
বুধবার সকালের দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে, ভারতের অভিযানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য পাক সশস্ত্র বাহিনীকে যথাযথ ক্ষমতা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ভারতের অভিযানকে ‘বিনা উস্কানিতে, কাপুরুষোচিত এবং বেআইনি যুদ্ধ পদক্ষেপ’ বলেছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। এতে ‘নিরীহ পাকিস্তানি’দের প্রাণহানি হয়েছে এবং পাকিস্তানের তসার্বভৌমত্বের উপর আঘাত নেমে এসেছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। তাই ‘আত্মরক্ষার জন্য’ তারা তাদের পছন্দ মতো সময় এবং স্থান অনুসারে প্রতিক্রিয়া জানাবে। সেহবাজ শরিফের কার্যালয় বলেছে, ‘পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ করার জন্য যথাযথ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’ পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় যখন প্রতিশোধের কথা বলছে, তখন উল্টো সুর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের কণ্ঠে। ব্লুমবার্গ টিভিকে তিনি বলেছেন, ভারত যদি আর কিছু না করে, পাকিস্তান আর শত্রুতার পতে যাবে না। উত্তেজনা কমানোর পথে হাঁটবে। তিনি বলেছেন, ‘ভারতই হামলা শুরু করেছে। বরাবরই ওরাই শুরু করে, আমরা শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া জানাই। গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা বলে আসছি, আমরা কখনও ভারতের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কোনও পদক্ষেপ করব না। কিন্তু যদি আমাদের উপর আক্রমণ হয়, আমরা প্রতিক্রিয়া জানাব। যদি ভারত এখন পিছু হটে, আমরা অবশ্যই পিছিয়ে যাব।’